অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে, জুলাই বিপ্লবের মূল কথা ছিল সংস্কার এবং তার সরকার নির্বাচনের আগে এই সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকসের সঙ্গে এক বৈঠকে ড. ইউনূস এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে সুইডেনের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা বাংলাদেশে আরও সুইডিশ বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই। অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ব্যবসার পরিবেশ সহজতর করতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, তার সরকার ইতিমধ্যেই দুর্নীতি দমনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগ সহজতর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে শ্রম আইন বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন অনুমোদনের প্রক্রিয়াও চলছে।
ড. ইউনূস বলেন, “দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। বিশেষ করে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর উচ্চ প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে। দাবি-দাওয়া মেটানো একটি বড় দায়িত্ব, এবং আমরা এই বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, নির্বাচনের আগে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা তাদের প্রধান লক্ষ্য। “বিপ্লবের মূলমন্ত্রই ছিল সংস্কার এবং আমরা তা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” বলেন তিনি।
সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন এবং পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগে উন্নয়ন, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণ এবং বেসামরিক প্রশাসনের কার্যক্রমে সংস্কারের জন্য সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করেন।
বৈঠকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব, সরকারের বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশে সুইডিশ বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা এবং গণঅভ্যুত্থানে নারীর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক শাহনাজ গাজী।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা সুইডেনসহ আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। নির্বাচনের আগে এই সংস্কার কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে আরও শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।