বরিশালের হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আজ মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে দলটির আমির শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগকে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ রাক্ষসে পরিণত হয়েছিল। তাঁরা দাম্ভিক ছিলেন, বড় অহংকারী ছিলেন। মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন এবং কাউকে সম্মান দিতেন না। দুনিয়ায় কিছুটা পাওনা তাঁরা পেয়েছেন, কিছুটা বাকি আছে।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাঁরা গণহত্যাকারী ব্যক্তি এবং দল। তাই আমরা চাই দল এবং গণহত্যাকারী প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার হোক। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে বিদ্যমান আইনে তাঁদের যথাযথ পাওনাটা সমঝে দেওয়া হোক।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘রাজনীতির নামে যদি গণহত্যা হয়, তাহলে এ ধরনের দল বাংলাদেশের জনগণ বরদাশত করবে না। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়; বরঞ্চ গণহত্যাকারী একটি সিন্ডিকেট।’
বিদেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, ‘যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁদের বলি, সত্যিই যদি দেশটাকে ভালোবাসেন, আসেন, চলে আসেন। কী হয়েছে অসুবিধা নাই তো! আপনাদের আমলে আমরা দফায় দফায় জেলে গিয়েছি। এখন আপনারা আসলে সেটা দেখার সুযোগ পাবেন।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে গণহত্যাকারী দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা আগে বিচার হওয়া উচিত। ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা আগে ন্যায়বিচার পাক। তাদের রায়ই নির্ধারণ করবে, আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না।’
সম্মেলনে জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিভক্ত করেছে। সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেও রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে সেটি বিদায় করা সম্ভব হয়নি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শেষ আন্দোলনটি রাজনৈতিক ছিল না। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা করা হোক।’
আগামী নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে করার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘জামায়াত ২ কোটি ৬০ লাখ লোকের সংগঠন। আমাদের লক্ষ্য সাম্য, মানবিকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়া। দেশে ফ্যাসিবাদের আর কোনো স্থান হবে না। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদেরও এ জাতি আর গ্রহণ করবে না।’
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, মুয়াযযম হোসাইন এবং বরিশাল জেলা আমির মোহাম্মদ আবদুল জব্বার।
বরিশাল নগরের বান্ধ রোডে আয়োজিত এই কর্মী সম্মেলনে বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মু. বাবরের সভাপতিত্বে বেলা দুইটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকার জামায়াতের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।