আওয়ামী লীগকে ‘গণহত্যাকারী দল’ আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত সমাবেশে জুলাই, শাপলা চত্বর ও পিলখানার ঘটনাগুলোর ‘গণহত্যার বিচার’ চেয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেন শহিদদের পরিবার ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন,“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা তুললেই সরকার পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়। কিন্তু শাপলা চত্বর, পিলখানা ও জুলাই গণহত্যার সময় তারা কোথায় ছিল?” তিনি আরও বলেন, “এ জেনারেশনের রক্তের সাথে খেলা করবেন না। এই প্রজন্ম ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনে নামাতে পারে।”
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নই, কিন্তু একজন সদস্য বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের বিচার হবেই।” তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “বিএনপি, জামায়াত কিংবা এনসিপিকে দিল্লির দাসত্বে জড়াতে দেব না।”
সমাবেশে উপস্থিত শহিদ পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিচার দাবি করেন, সাইমের মা, “যাত্রাবাড়ীতে আমার নিরস্ত্র ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হলো। ঈদ গেল, আমি ঈদ করতে পারিনি। আমি বিচার চাই, হাসিনাকে ফাঁসি চাই।”
সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা, “আশুলিয়ায় আমার ছেলেকে জীবন্ত ভ্যানে পুড়িয়ে মারা হয়। আমি ছাড়ব না, আমার ছেলেকে যারা পুড়িয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
মেজর তানভীরের স্ত্রী তাসনূভা মাহা, “২০০৯ সালে আমার স্বামী নিখোঁজ হন। তার লাশ আজও আমি পাইনি। হিন্দিভাষীরা আমার সন্তানের লিঙ্গ পরীক্ষা করেছিল। আমরা বিচার চাই।”
সোহেল রানার ভাই, “আমার ভাইকে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। তার কবর কোথায়, জানি না। অন্তর্বর্তী সরকার কেন ডিএনএ টেস্ট করেনি?”
ইনকিলাব মঞ্চের ৫ দফা দাবি:
১. আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু।
২. আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা।
৩. শাপলা গণহত্যার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের সহায়তায় শহিদদের তালিকা।
৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ।
৫. সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতকরণ সংযোজন।