রাজধানীতে আয়োজিত বিক্ষোভ ও গণমিছিলে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে তার দল কোনো আপস করবে না। তিনি অভিযোগ করেন, ভোট ও নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহল কথা বললেও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ততটা উচ্চকণ্ঠ শোনা যায় না।
শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই বিক্ষোভ ও গণমিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, ৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে তারা ডিসিদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। ১২ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ ১৬ বছরের লুটপাটের বিচার চেয়ে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি চলবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে রাজপথে নামতে হচ্ছে, যা সরকারের ব্যর্থতারই প্রমাণ। রাষ্ট্র সংস্কারের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে এবং প্রকৃত অংশীজনদের নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘ছয় মাস ধরে স্থানীয় সরকারের কোনো প্রতিনিধি নেই। জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে, যা প্রশাসনের প্রস্তুতি বোঝার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।’
গণ অধিকার পরিষদের সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে গণহত্যা চালিয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার এবং গণহত্যার বিচার করার দাবি আরও জোরদার হয়েছে।
বিক্ষোভ ও গণমিছিলে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন। সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম, আরিফ তালুকদার, মাহফুজুর রহমানসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
গণ অধিকার পরিষদের এই বিক্ষোভ ও গণমিছিল থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার জোরালো দাবি ওঠে। নেতারা জানান, তারা এ বিষয়ে কোনো ধরনের আপস করবে না এবং আগামী দিনগুলোতে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।