রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসায় শুক্রবার সকালে একটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল বাসা থেকে দেড় লাখ টাকা ও চার ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবারের শিশুসন্তানটিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনা অনুযায়ী, ফারজানা আক্তার, যিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন, তাঁর স্বামী ও সন্তান নিয়ে আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসায় বসবাস করছিলেন। শুক্রবার সকালে একদল ডাকাত অস্ত্রের মুখে তাদের বাসায় ঢুকে। ডাকাতেরা প্রথমে দেড় লাখ টাকা এবং চার ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এরপর, এক অবাক করা পদক্ষেপ হিসেবে ডাকাতেরা তাদের ছোট শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
ফারজানার সহকর্মীরা জানান, ঘটনা শোনার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। তবে তিনি জানতে পারেন, ডাকাতেরা শিশুটিকে নিয়ে চলে গেছে এবং এখনো শিশুটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সহকর্মী জানান, এই ঘটনায় পুরো পরিবার শোকাহত ও উদ্বিগ্ন।
লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাশৈনু প্রথম আলোকে জানান, পুলিশ ডাকাতির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং আশপাশের এলাকাগুলোর সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অপহৃত শিশুটির খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে, এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত তার উদ্ধার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো অপহৃত শিশুর নিরাপত্তা। পিতামাতার জন্য এটি একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, এবং পুরো এলাকাজুড়ে এক ধরনের আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, তবে এই ঘটনায় অনেক প্রশ্ন উঠছে, যেমন এই ধরনের অপরাধের পেছনে কি কোনো গ্যাংয়ের হাত রয়েছে, এবং এরূপ অপরাধকে প্রতিরোধ করতে আরও কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
যদিও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, অনেকেই মনে করছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশি টহল বাড়ানো এবং সিসিটিভি ক্যামেরার কার্যকর ব্যবহারকে আরো শক্তিশালী করা যেতে পারে।
আজিমপুরের ডাকাতি ও অপহরণের এই ভয়াবহ ঘটনা শুধু এক পরিবারের জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে। শিশু অপহরণ এবং বাসায় ডাকাতির ঘটনা না শুধু জনগণের উদ্বেগ বাড়িয়েছে, বরং নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি আস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পুলিশের তৎপরতা এবং তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন হওয়া এবং অপহৃত শিশুটির দ্রুত উদ্ধার হওয়ার আশা করা যাচ্ছে।