নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ও সরকারি সফর আলী কলেজের সাবেক জিএস সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
সকালেই নিহত জিদনী আক্তারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত সুমন মিয়া আড়াইহাজার উপজেলার শ্রীনিবাসদী গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে এবং নিহত জিদনী আক্তার বৈলারকান্দি গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার মেয়ে।
জানা গেছে, দেড় বছর প্রেমের পর সুমন ও জিদনী বিয়ে করেন। দেড় মাস আগে তাদের একটি সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নিয়মিত নির্যাতন করতেন সুমন।
নিহতের পরিবার জানায়, ঘটনার আগের রাতে জিদনী ভিডিও কলে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুমনের নির্যাতনের কথা জানান। এ সময় যৌতুকের দাবির বিষয়টিও পরিবারকে অবহিত করেন তিনি। এর পরদিন সকালে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ তাদের।
অন্যদিকে, সুমন মিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানেই তিনি মারা যান।
নিহতের চাচা আহসান হাবিব জানান, জিদনীকে বিয়ের পর থেকেই সুমন যৌতুকের জন্য চাপ দিতেন। সন্তান জন্মের আগে পর্যন্ত তাকে ঠিকমতো চিকিৎসাও করানো হয়নি। পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো যোগাযোগের সময় নির্যাতনের কথা জানানোর পরই তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নিহতের লাশ নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় পুলিশ এবং বিএনপির কয়েকজন নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের হস্তক্ষেপে সংঘর্ষ থামে এবং হাসপাতালের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনা আড়াইহাজার এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।