৫ আগস্টের পর থেকে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, মেয়রসহ একাধিক উচ্চপদস্থ নেতাকে আদালতে তোলার সময় এক নতুন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখন তাদের দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে হাজতখানা থেকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন এবং অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর বিরুদ্ধে।
গত ১০ মার্চ, পলক অভিযোগ করেন, "কথা বললেই রিমান্ড আর মামলার সংখ্যা বাড়ে, হাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে রাখে।" কিন্তু কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুকী।
১২ মার্চ সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়েছিল আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দেখা যায়, তারা দুজনেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন, দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরানো। তাদের সাথে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সুলাইমান সেলিম, ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মুদ্দাসসির খান জ্যোতি। এই নেতাদেরও দুই হাত পেছনে হাতকড়া পরানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে পিপি ওমর ফারুকী জানিয়েছেন, "ইদানীং এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কারণ কিছু আসামি হাজতখানা থেকে আদালতে যাওয়ার সময় হাত উঁচু করে সরকারবিরোধী বক্তব্য দিতে চাইছেন। তাদের যাতে এ ধরনের প্রতিবাদ করতে না পারে, সে জন্য তাদের হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরানো হচ্ছে।"
মঙ্গলবারের (১২ মার্চ) এই ঘটনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং অনাস্থা জানানোর একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর, শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে এবং এরপরই ২৭ জন মন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। তাদের মধ্যে আনিসুল হক, সালমান, পলক, সুলাইমান এবং অন্যান্য নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই কারাগারে আছেন, এবং তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে।
এই পদক্ষেপ সরকারের কঠোর মনোভাব এবং প্রতিবাদমূলক আন্দোলনকে থামানোর জন্যে তার নির্বাচিত ব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।