জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা চাই ভারত যেন শান্তিতে থাকে। তবে, তারা যেন বাংলাদেশের অশান্তির কারণ না হয়। মাঝেমধ্যে তারা সীমা অতিক্রম করে। বাংলাদেশের মসনদে কে বসবে, সেটা ভারতের ঠিক করার বিষয় নয়। এটি বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্ত।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দিবস বলে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাবিদাররা তখন চুপ ছিলেন কেন?” সীমান্তে ফেলানীর লাশ ঝুলে থাকার প্রসঙ্গও তুলে ধরে তিনি বলেন, “যখন সীমান্তে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হয়, তখন চেতনার কথা শোনা যায় না।”
শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষের সহাবস্থান আছে। তবে, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর বিভাজন তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা নিয়েছে।” তিনি বলেন, “জামায়াত মন্দির পাহারা দিয়েছে, মঠ, প্যাগোডা এবং চার্চও রক্ষা করেছে। আমরা চাই, এমন একটি সমাজ যেখানে কারও উপাসনালয় পাহারা দিতে না হয়।”
তিনি দাবি করেন, “আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করতে আমরা ২০১৩ সালে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলাম। ১৯৭২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আমরা চাই, সত্য জাতির সামনে আসুক। দোষী হলে আমাদেরও শাস্তি হোক।”
শফিকুর রহমান বলেন, “দেশে যারা খুন, গুম, চুরি, এবং বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। এই অর্থ জনগণের, যা দেশে ফেরত আসা উচিত।”
তিনি জনসংখ্যাকে দেশের সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই বিপুল জনসংখ্যা অভিশাপ নয়। আমরা যদি কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারতাম, তবে দেশের চেহারা বদলে যেত।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই না বাংলাদেশ আর বিভক্ত হোক। দেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত একসঙ্গে কাজ করুক। আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, এবং সাম্যের মানবিক বাংলাদেশ চাই।”
তিনি বলেন, “মানবতার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের যুদ্ধ চলবে। আমরা চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, এবং ঘুষমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাব।”
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদুল হালিম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আবদুল হাকিম, এবং বর্তমান জেলা আমির বেলাল উদ্দীন প্রমুখ।