আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম লাগাতার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩১০০ মার্কিন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে। এই প্রবণতা দেশের বাজারেও স্বর্ণের দামের ঊর্ধ্বগতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার (৩১ মার্চ) বিশ্ববাজারে স্পট স্বর্ণের দাম রেকর্ড ৩১০৬.৫০ ডলারে পৌঁছেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম ১৮ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ। চলতি মাসের শুরুতেই স্বর্ণের দাম প্রথমবারের মতো ৩০০০ ডলারের সীমা অতিক্রম করেছিল।
বিশ্ববাজারের বিশ্লেষকদের মতে, ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বাণিজ্য শুল্কের অস্থির পরিস্থিতির কারণে স্বর্ণ এখন নিরাপদ বিনিয়োগে রূপ নিয়েছে। স্বর্ণ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরক্ষামূলক সম্পদ হিসেবে আরও জনপ্রিয় হচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ বিনিয়োগ ব্যাংকগুলো স্বর্ণের দামের পূর্বাভাস সংশোধন করে উচ্চমাত্রায় উন্নীত করেছে। গোল্ডম্যান স্যাশ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম ৩৩০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। ব্যাংক অব আমেরিকা পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালে স্বর্ণের দাম ৩০৬৩ ডলার এবং ২০২৬ সালে ৩৩৫০ ডলারে উন্নীত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির শিল্পকে সুরক্ষা দিতে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে নতুন শুল্ক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। আমদানি করা গাড়ি ও অটো যন্ত্রাংশের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। চীন থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ২ এপ্রিল ট্রাম্প নতুন পারস্পরিক শুল্ক ঘোষণা করতে পারেন, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মেইর মনে করেন, “শুল্ক সংক্রান্ত টানাপোড়েন স্বর্ণের দাম আরও বাড়িয়ে তুলবে, যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের কোনো সমাপ্তি ঘটে।”
বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়তে থাকলে স্বর্ণের চাহিদা আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।