বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ফেসবুকে আকর্ষণীয় অফারে ইলিশ বিক্রির নামে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে পাবনায়। গত চার দিনে জেলার অন্তত ১১ জন ভুক্তভোগী প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রতারক চক্রটি ‘চাঁদপুর ইলিশ’ ব্র্যান্ড ব্যবহার করে অনলাইনে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়ার বাসিন্দা ফজলুর রহমান জানান, ফেসবুকে ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’ নামের একটি পেজ থেকে আকর্ষণীয় অফার দেখে তিনি ১১ এপ্রিল অর্ডার করেন। ৩ হাজার ৫০০ টাকায় চারটি বড় ইলিশ ও ১ হাজার টাকায় ১ কেজি ইলিশ ডিমের অর্ডার দেন। অর্ডার নিশ্চিত করতে ৫৫০ টাকা অগ্রিম পাঠাতে বলা হয়। পরদিন ফোনে জানানো হয়, মাছ পেতে হলে আরও ৩ হাজার ৯৪৯ টাকা পাঠাতে হবে। পুরো টাকা পরিশোধের পর থেকেই নম্বর বন্ধ!
একইভাবে, কাচারীপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মীর্জা আজাদ এবং জোড়বাংলা সড়কের গৃহিণী মাহবুবা কাজলসহ অন্তত ১১ জন ভুক্তভোগী এই প্রতারকদের শিকার হয়েছেন। চার দিনে প্রতারকদের পকেটে গেছে প্রায় ৯৭ হাজার টাকা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, প্রতারকরা বিভিন্ন ফেসবুক পেজ খুলে অভিনব কৌশলে ফাঁদ পাতছে। উল্লেখযোগ্য পেজগুলোর মধ্যে রয়েছে:
চাঁদপুর ইলিশ বাজার, ইলিশের বাড়ী চাঁদপুর, পদ্মার ইলিশের বাজার, চাঁদপুরের টাটকা ইলিশ, হাফিজুল গনি ফিশিং হাউস, ইলিশ ঘাট চাঁদপুর, জামানের মাছের আড়ত, মাছের বাজার ইত্যাদি।
চাঁদপুরের স্থানীয় সাংবাদিক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, “চাঁদপুরে ইলিশের বর্তমান বাজারদর ২ হাজার টাকার নিচে নয়। কেউ যদি বলে এক কেজির বেশি ইলিশ ৭০০ টাকায় দিচ্ছে, সেটা অবশ্যই প্রতারণা।"
এ বিষয়ে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ফেসবুকে এমন অফারে কেউ যেন প্রলুব্ধ না হয়।”
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাবনা শাখার সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি বলেন, “এটি ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।”
পহেলা বৈশাখ বা যেকোনো উৎসবকে ঘিরে অনলাইন প্রতারণার প্রবণতা বাড়ছে। তাই গ্রাহকদের প্রতি অনুরোধ, যাচাই-বাছাই ছাড়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা লেনদেন না করতে। মনে রাখুন, অফার যতই লোভনীয় হোক, অযৌক্তিক দাম মানেই হতে পারে বড় প্রতারণার ফাঁদ।