দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইলের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) চার প্রকৌশলী এবং দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে, যেখানে সড়ক উন্নয়নের কাজ না করেই বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দুদক টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বাছেদ আলী বাদী হয়ে এই দুটি মামলা দায়ের করেন। প্রথম মামলায় আসামিরা হলেন ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. শহীদুর রহমান খান, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম খান এবং সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাইনুল হক। দ্বিতীয় মামলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমানকে আসামি করা হয়েছে, তবে এখানে মাইনুল হক ছাড়া অন্যান্য তিন প্রকৌশলীও আসামি।
প্রথম মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, এলজিইডির ‘ময়মনসিংহ অঞ্চলের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (এমআরআরআইডিপি)’ আওতায় নাগরপুরের তেবাড়িয়া–দপ্তিয়র সড়ক উন্নয়ন কাজ পায় ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন। কিন্তু প্রকল্পে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের সাব–বেজের কাজ কম করে এবং ৭৫ মিটার সড়ক অবহেলা করে। এর ফলে সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য উত্তোলন করা হয় ৩১ লাখ ১ হাজার ৫৯১ টাকা, যা প্রকৃত কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
অপর মামলায়, একই প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরে সিংজোড়া–গয়হাটা সড়ক উন্নয়ন কাজ পায় মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। এই সড়কের ১ হাজার ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটিতে কার্পেটিংয়ের কোনো কাজ না করেই ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৫১০ টাকার বিল উত্তোলন করা হয়।
দুদক অভিযোগ করেছে যে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সড়ক উন্নয়নের কাজ না করেই বিল অনুমোদন করেছে এবং জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। দুই মামলায় প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০ এপ্রিল, দুদক একটি টিম নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিদর্শন করে এবং সেখানে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা পরিমাপ করে দুর্নীতির চিত্রটি স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলম জানিয়েছেন, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অভিযানে আসামিরা যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।