রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। শুক্রবার (আজ) সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাদপন্থীরা ঢাকায় আসেন এবং কাকরাইল মসজিদের আশপাশে জড়ো হন। দুপুরে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য তাঁরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
তাবলিগ জামাতের দুটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলমান। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন মাওলানা জোবায়ের আহমদ এবং অন্যপক্ষে মাওলানা সাদ কান্ধলভী। এই বিরোধ নিরসনের জন্য সরকারের স্বরাষ্ট্র ও ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ১২ নভেম্বর একটি সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আওতায় দুই পক্ষকে কাকরাইল মসজিদে আগের নিয়মে অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়।
চার সপ্তাহ কাকরাইল মসজিদ জোবায়েরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দুই সপ্তাহ দায়িত্ব পালন করবেন সাদপন্থীরা। আজ থেকে সাদপন্থীদের দুই সপ্তাহ শুরু হওয়ায় তাঁরা কাকরাইল মসজিদে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সাদপন্থীরা মসজিদে প্রবেশের সময় কিছুটা হট্টগোল সৃষ্টি হয়। তবে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এরপর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সবাই জুমার নামাজ আদায় করেন।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক জানান, “সবাই শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করেছেন। কোনো বড় ধরনের ঝামেলা হয়নি।”
তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর ভূমিকা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। জোবায়েরপন্থীরা মাওলানা সাদের কিছু মতবাদকে বিতর্কিত বলে দাবি করেন এবং তাঁকে বাংলাদেশে আসতে বাধা দেন। সমঝোতা অনুযায়ী, মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসতে পারবেন না।
সমঝোতার অংশ হিসেবে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব আয়োজন করবে জোবায়েরপন্থীরা। দ্বিতীয় পর্ব আয়োজন করবে সাদপন্থীরা। সাদপন্থীদের দাবি, মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হোক এবং তাঁদের কোনো বাধা দেওয়া না হোক।
চাঁদপুর থেকে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা নিয়ম অনুসারে কাকরাইল মসজিদে এসেছি। আমাদের আশা, নিয়ম মেনে ইজতেমা আয়োজনের সুযোগ দেওয়া হবে এবং কোনো বাধা দেওয়া হবে না।”
কাকরাইল মসজিদে নিয়মিত জমায়েত তাবলিগ জামাতের বিরোধ মেটাতে ভূমিকা রাখলেও এটি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার পরিবেশে প্রভাব ফেলছে। তবে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার কারণে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধ একটি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সরকারের সমঝোতা প্রক্রিয়া কার্যকর থাকলে এই বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। তবে উভয় পক্ষের অংশগ্রহণ এবং মতপার্থক্যের প্রতি সহনশীল আচরণই দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের চাবিকাঠি।