ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল নাড়াচাড়া হয় না—এমন অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা কর্মকর্তার সরাসরি নির্দেশে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিয়মিতভাবে উৎকোচ গ্রহণ করে আসছেন।
স্থানীয় শিক্ষকরা জানান, ইএফটি, এমপিও সংশোধনী, টাইম স্কেল, আপার স্কেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফাইলগুলো অনলাইনের মাধ্যমে পাঠানোর কথা থাকলেও তা ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হয় যদি না উৎকোচ প্রদান করা হয়।
নতুন বাজার সম্মিলিত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান অভিযোগ করেন, “আমি এমপিও আবেদন করলে তা ফরওয়ার্ডিং না করে বারবার হয়রানি করা হয়। অফিস সহায়ক মকসেদুল আলম ৫ হাজার টাকা ঘুষ চান। আমি মোট ৪ হাজার ৫০০ টাকা দিলেও এখনও পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, অফিসে গেলে বা ফোনে কথা বললে শুধু “ছাড়ছি”, “দিচ্ছি” বলে ঘুরানো হয়, কিন্তু কোনো কাজ হয় না। তারা হয়তো আরও টাকা চায়।
অভিযোগ উঠেছে, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এবং অফিস সহায়ক মকসেদুল আলম মিলে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে নিয়মিত ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একাধিক শিক্ষক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
মকসেদুল আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “শিক্ষকরা আমার নামে মিথ্যাচার করছে। ফাইল ছাড়ার দায়িত্ব স্যারের। আমি কেবল অফিস সহায়ক।”
শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমি কোনো কাজের জন্য কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। পিয়ন তো কাজ করে না, তাহলে শিক্ষকরা তার কাছেই কেন টাকা দেয়?”
ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, “উৎকোচ গ্রহণ কিংবা হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। কেউ বাড়তি টাকা চাইলে বা কাজ আটকে রাখলে শিক্ষকদের সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”