
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না কৃষকের সার। চলতি বোর মৌসুমে সারের সংকট দেখিয়ে ডিলার, সাব- ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি করছে ।
ইউরিয়া, ফসফেট ( টিএসপি), নিউরেট অফ পটাশ ( এমওপি) বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা।
কৃষকদের অভিযোগ, ডিলাররা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রির কারণে খুচরা বিক্রেতারা কৃষকে সার না দিয়ে বেশি দামে মৎস্য চাষীদের কাছে বিক্রি করছে এর ফলে কৃষকরা সঠিক মূল্যে সার পাচ্ছে না। কৃষকদের ভাগে যেটুকু মিলছে তা পর্যাপ্ত নয়। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সারের সংকট দেখিয়ে কৃষকের কাছ থেকে বেশি মূল্য নিচ্ছে বলে অভিযোগ। উপজেলা কৃষি অফিস সারের সংকট নেই বলে জানিয়েছে।
কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতা দোকানে সরকারি মূল্য তালিকা টা নিয়ে রাখলেও সারের সংকট দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে বস্তাপতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছে। এছাড়াও বিক্রেতারা কৃষকদের সার ক্রয় রশিদ প্রদান করছেন না যদিও কোন কৃষককে রশিদ প্রদান করছেন তা সরকার নির্ধারিত মূল্যে কিন্তু তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্য। ডিলার ও সাব ডিলারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে কৃষকরা। সরকার অনুমোদিত ডিলার সাব ডিলার সরকারি নির্দেশনা না মানায় দেখা দিয়েছে সারের কৃত্রিম শংকট। এর ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে কয়েক গুণ। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ভ্রম্যগাতী গ্রামের কৃষক হাবিল শেখ ও উসমান জানান, চলতি মৌসুমে চার বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করছি। এখন টিএসপি ও ডি ও পি সারের প্রয়োজন কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন । বাধ্য হয়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। খুলনার দিঘলিয়া গ্ৰামের কৃষক জাহিদ, মহেশপুর গ্রামের আনিচ গাজী, হাজী গ্রামের কৃষক এস্কেনদার বলেন, গত সপ্তাহের সার কিনেছি ২৭ টাকা কেজি দরে আজ সেই সার কিনলাম ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে।
বি সি আই সির ডিলার বেগ জাহিদুল ইসলাম জানান , সারের বর্তমান কোন সংকট নেই তবে কৃষকেরা আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত সার মজুদ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খুচরা সার বিক্রেতা জানান, গত একমাস আগে থেকেই স্যারের মূল্য কিছু কিছু করে বাড়ানো হচ্ছিল মূলত সেখান থেকেই সারের মজুদ শুরু হয়েছে। এখন স্যারের সংকট দেখিয়ে দাম বেশি নিচ্ছেন ডিলাররা। বলছেন সার নেই আবার বাড়তি টাকা দিলে চাহিদামতো মিলছে সার। এদিকে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। সারসংকটের গুজবে কৃষকরা চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত সার কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কিশোর আহমেদ বলেন, সারের কোন সংকট নেই এরপরও সার সংকট দেখিয়ে কোন ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় কৃষকদের নিকট থেকে বেশি মূল্য নিচ্ছে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে।
Like this:
Like Loading...
Related