ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে প্রতিভার ঝলক অনেক দেখা যায়, তবে প্রতিভা ধরে রাখা এবং সাফল্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন সংগ্রাম আর অধ্যবসায়ের। এমনই এক অনুপ্রেরণাদায়ী নাম প্রিয়া বাপাট। মারাঠি এবং হিন্দি চলচ্চিত্রের এই অভিনেত্রী জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ নিজের একটি স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।
প্রিয়া বাপাটের চলচ্চিত্র জীবনের শুরু হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। ২০০০ সালে তিনি “ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর” সিনেমায় কাজ করেন। তারপরে ২০০৩ সালে রাজকুমার হিরানির সুপারহিট সিনেমা “মুন্নাভাই এমবিবিএস”-এ সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। সিনেমাটি ১২৪ কোটি রুপি আয় করলেও তার ক্যারিয়ারে তা বড় প্রভাব ফেলতে পারেনি।
প্রিয়া তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন। প্রথম বিজ্ঞাপনের সুযোগ পাওয়ার আগে ১০০ বারের বেশি প্রত্যাখ্যাত হন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি মুম্বাইয়ের ঘিঞ্জি এক আবাসনে জীবন কাটান। তার জীবনের এই সময়টা ছিল সংগ্রামের এক অনন্য উদাহরণ।
২০০৮ সালে মহেশ মঞ্জরেকরের “মি শিবাজিরাজে ভোঁসলে বলতোয়” সিনেমায় অভিনয় করে মারাঠি সিনেমায় নিজের উপস্থিতি জানান দেন। এরপর ২০১২ সালে “কাকস্পর্শ” সিনেমার মাধ্যমে তিনি মারাঠি সিনেমার একটি উল্লেখযোগ্য নাম হয়ে ওঠেন। এখানে উমা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সমালোচকদের প্রশংসা পান এবং জি গৌরব ও মহারাষ্ট্র স্টেট অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও তিনি নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। ডিজনি+ হটস্টারের জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ “সিটি অফ ড্রিমস”-এ পূর্ণিমা রাও গায়কোয়াড় চরিত্রে অভিনয় করে নতুন প্রজন্মের দর্শকদের মাঝে আলোচনায় আসেন।
প্রিয়া বাপাট ২০১১ সালে অভিনেতা উমেশ কামাতকে বিয়ে করেন। তাদের প্রেমের গল্প শুরু হয় ২০০২ সালে। বিয়ের পর তাদের জীবন নতুন গতিপথ পায়।
প্রিয়া বাপাটের জীবনের গল্প শুধুমাত্র সাফল্যের নয়, এটি অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমের গল্প। তিনি তার অভিনয়ের মাধ্যমে সামাজিক ও মানবিক বার্তা পৌঁছে দিতে চান এবং তার ভক্তদের মাঝে সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান।
প্রিয়া বাপাটের জীবন আমাদের শেখায়, প্রতিভা থাকলেই যথেষ্ট নয়, তার সঙ্গে চাই সংগ্রাম ও নিরন্তর প্রচেষ্টা। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও যারা স্বপ্ন দেখেন এবং লড়াই চালিয়ে যান, তাদের জন্য প্রিয়া এক অনুপ্রেরণার নাম।