গত বছর আলুর বাজার দর বাড়তি থাকায় এ বছর চাঁদপুর জেলার কৃষকদের মধ্যে আলু চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখন পর্যন্ত জমির অবস্থা ভালো এবং কৃষকরা পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। কৃষি বিভাগ আশা করছে, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হতে পারে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার আট উপজেলায় গত বছর ৭,৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল, যা এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,০২ হেক্টরে। জেলার মধ্যে সর্বাধিক আলু আবাদ হয়েছে মতলব দক্ষিণ (২,৪৫০ হেক্টর), কচুয়া (২,০২৫ হেক্টর) এবং সদর উপজেলা (১,০৭২ হেক্টর) এলাকায়।
সরেজমিনে সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, চান্দ্রা, বালিয়া, বাগাদি, আশিকাটি, শাহমাহমুদপুর, হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়ন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদি দক্ষিণ ও পৌর এলাকায় দেখা গেছে, অধিকাংশ কৃষক এখন পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত। অনেকেই কীটনাশক ব্যবহার করছেন, যাতে রোগবালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দনপর্দি গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে আলুতে নাবী দশা রোগ দেখা দিলেও এ বছর কৃষকরা আগেভাগেই সতর্ক রয়েছেন এবং কীটনাশক ব্যবহার করছেন।
একই এলাকার কৃষক সুরুজ মিয়া জানান, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে এবং তার ভাতিজা শরীফ মিজি ৩ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। তারা এ বছর নিজস্ব বীজ ব্যবহার করেছেন, কারণ মৌসুমের শুরুর দিকে বক্স আলুর দাম অনেক বেশি ছিল। এখন পর্যন্ত তাদের জমির অবস্থা ভালো রয়েছে।
আশিকাটি এলাকার কৃষক ছাত্তার মিয়া ও আফজাল হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই আলু চাষ সম্ভব হয়েছে এবং ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে। তারা আশা করছেন, আলুর বাজার দর ভালো থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
সদরের বালিয়া এলাকার কৃষক ইব্রাহিম খান জানান, জানুয়ারি মাসে বাজারে যে আলু এসেছে তা মূলত মুন্সীগঞ্জ থেকে এসেছে এবং বর্তমানে প্রতিকেজি আলুর দাম ২৫-৩০ টাকা। স্থানীয় কৃষকদের জমির আলু বাজারে এলে আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। যদিও নাবী দশা রোগ নিয়ে কৃষকরা কিছুটা উদ্বিগ্ন, কৃষি বিভাগ তাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে। এখন পর্যন্ত আলু চাষের অবস্থা ভালো থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে এবং কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।