বাংলাদেশ ১৯৭১ইং সালে স্বাধীনতার পর রাজপথের করুন ইতিহাসের দিন-রাত-মাস-বছর- যুগের শ্রেষ্ঠ কষ্টসহিষ্ণু তৃণমুলনেতাকর্মীর দল হিসেবে উপাধী বা এওয়ার্ড যদি কোন রাজনৈতিক দলকে দেয়া হয় তাহলে কোন রাজনৈতিক দল সে এওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্য হবে? প্রিয় পাঠক, আপনার কি বলে মনে হয়? আমার মনে হয় বিএনপি'র। বিএনপি এমন একটি মতাদর্শীর দল যার তৃণমূলেরনেতাকর্মীরা 'নিজের খেয়ে ধানের শীষ'বলে পাড়া-মহল্লায় স্লোগান দেয়। বিএনপির তৃণমূলনেতাকর্মীরা যেন মৌমাছি আর বিএনপি হলো মধুর চাক। বিএনপির মাথাগুলো কখনও নীতিনৈতিকতা থেকে দূরে কখনও বহুসিদ্ধান্তে সিদ্ধান্তহীনতা,হতাশা,গ্রুপিং ও লোভে ডুবে থাকলেও রাজপথে জড়ো হয়ে গনতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ঠিকই । এটিই বিএনপিকে দিয়েছে অন্যরকম উচ্চতা। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন বিএনপির রয়েছে অনন্যা দলের মিলিত শক্তি-এটি বিএনপির একার নয়।তবে চিরন্তন সত্য কথা যে, বিএনপির নেতৃত্বই আজকের এই রাজনৈতিক ফলাফল।
গত ৫ ই আগষ্টের পর রাজনীতিতে আরো কয়েকটি পল্টির বা ডিগবাজির কথা গনমাধ্যম ও জনসাধারণের মুখে শোনা যাচ্ছে। এক, বিএনপির ছায়াতলে থেকে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বেঁচে থেকে আজকের নতুন দখলদাররা সেই বিএনপিকেই ছোঁবল মারছে! সম্প্রতী, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনও সেই ডিগবাজির খাতায় নাম লিখিয়েছেন!
বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে-বদনাম করতে বিভিন্ন গ্রুপকে দিয়ে সামাজিক বিশৃখলা যেমন চুরি,ছিনতাই,ডাকাতি,ধর্ষণ,অপহরণ করে বেড়াচ্ছে-এরকম ১৯৭১ ইং সালে স্বাধীনতার পরপর স্বাধীনতাকে বদনাম আর আওয়ামী লীগের ওপর চাপ বাড়াতে কিছু বামদল এরকম কৌশলে লিপ্ত ছিলো বলে অভিযোগ ছিলো। দুই, আওয়ামী লীগের সাথে দেশের বহু পাড়ামহল্লায় বিএনপির নেতাকর্মীরা সুযোগ সুবিধা নিয়ে শান্তিতে ছিলো কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে সেই বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর পল্টি নিয়েছে!
তবে এ কথা সত্য যে,বিগত আওয়ামী লীগ সরকার থেকে তৃণমূলনেতাকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।বিএনপির তৃণমূলনেতাকর্মীদের মতো গুলি,লাঠিপেটা,জেল-জুলুম মেনে নিতে মনে হয় আর পারবেনা আওয়ামী লীগ তৃণমূলনেতাকর্মীরা।এটিই হলো আওয়ামী লীগের চরম ব্যর্থতা।
২০১৮ ইং সালের নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে তৃণমুলনেতাকর্মীরা গরু ছাগলে পরিণত হয়েছিলো! অহংকার দেম্ভে ক্ষমতাকে চীরস্থায়ী ভেবে তৃণমুলকে কোন গননায় ধরেনি।দিনের ভোট রাতে দেবার জন্য অনেক বিএনপির সুবিধাভোগী নেতাকর্মীরা নিজ প্রয়োজনীয়তাকে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বাড়ানোর জন্য দিনের ভোট রাতে দিতে সহায়তা করেছিলো! আর আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপিসহ অনন্যা দলের ভোট কিনতে গিয়ে দলে স্থান দিতে গিয়ে গাঁও গ্রামের ভাষায়,"লাংগের আশায় ভাতার হারানোর মতো" ঘটনার জন্ম দিয়েছে! বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীরা নিজের অস্তিত্বকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের সাথে মিশে এককার হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের অস্তিত্ব বাঁচাতে পারছে কি কারো সাথে মিশতে?
বিএনপি জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে বিগত আওয়ামী লীগ ও বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের আমলেও রাজপথে আছে কিন্তু বিগত ১৬ বছরের অরাজনৈতিক কর্মকান্ড-অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত- আলস্যের চর্বি নিয়ে,আকাশে বাতাশে মাঠেঘাটের আওয়ামী লীগ ও তার নেতাকর্মীরা এখন কোথায়? চোখে শুধুই সরষে ফুল!
তাই,একটি বাংলা চলচ্চিত্রের ভাইরাল ভিডিওর মতো,"চাচা,হেনা কোথায়?-এর সুরে মিলিয়ে বলা যায় চাচা,"আওয়ামী লীগ কোথায়"?