1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
চিকিৎসা সেবায় নৈতিকতার সংকট: মানুষের আস্থা ফিরবে কবে? - RT BD NEWS
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দেওয়ানগঞ্জে গাছ কাটার সময় পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণ ও প্রথম সভা অনুষ্ঠিত নকশা লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজউক চেয়ারম্যান নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ! নেট রানরেটের জোরে বাদ পড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম G2G চুক্তির আওতায় সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল পৌঁছেছে কুয়েটে উপাচার্যের প্রতীকী গদি জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ বাংলাদেশের বর্তমান নেতৃত্বের ‘ভারত-বিরোধী কৌশল’ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি, বাড়ছে অর্থনৈতিক চাপ গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা: দুই দিনে নিহত ৯২ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গাজীপুরে মা নিজে দুই শিশু সন্তানকে বঁটি দিয়ে নির্মম হত্যা করেছেন

চিকিৎসা সেবায় নৈতিকতার সংকট: মানুষের আস্থা ফিরবে কবে?

প্রতিবেদকের নাম :
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতকে ঘিরে মানুষের হতাশা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। চিকিৎসা নিতে ভারতসহ বিদেশমুখী রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, যা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা হ্রাসের ইঙ্গিত দেয়। আমাদের দেশেও বিশ্বমানের চিকিৎসক, উন্নত যন্ত্রপাতি ও আধুনিক হাসপাতাল রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এসব সুবিধা সাধারণ মানুষের জন্য কতটা সুলভ এবং মানবিক?

লিভার সমস্যার জন্য দেশের স্বনামধন্য লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. মাহাতাব আল-মামুনের কাছে গিয়েছিলেন আজিজুল ইসলাম। কিন্তু সেখানকার পরিবেশ, অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ, এবং মানবিকতার অভাব তাকে হতাশ করেছে। পরবর্তীতে কলকাতা লিভার ফাউন্ডেশনে গিয়ে একজন সাধারণ চিকিৎসকের ব্যবহার এবং সহজ চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়েছেন। এই উদাহরণটি স্পষ্ট করে যে, আমাদের দেশে চিকিৎসকদের ব্যবহার, অযৌক্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এবং চিকিৎসার ব্যবসায়িকীকরণের কারণে সাধারণ মানুষের আস্থা কমছে।

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালনের সময় নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। অনেক চিকিৎসক সকাল থেকে প্রাইভেট চেম্বার বা ক্লিনিকে সময় দেন এবং পরে সরকারি হাসপাতালে অল্প সময়ের জন্য উপস্থিত থাকেন। এর ফলে সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে অযৌক্তিক খরচ এবং অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করা হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক রিং বসিয়ে তিনটি রিংয়ের টাকা আদায়ের অভিযোগ কেবল একটি উদাহরণ। এমন অসংখ্য ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে, যার অধিকাংশই সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের কারণে প্রকাশ পায় না।

চিকিৎসা খাতকে জনবান্ধব করতে প্রথমেই প্রয়োজন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের উপস্থিতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং খরচের হিসাব প্রকাশ্যে রাখতে হবে। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা বা ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করে চিকিৎসা কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যেতে পারে। রোগীদের কাছ থেকে অযৌক্তিক খরচ আদায় বন্ধে কার্যকর মনিটরিং কমিটি গঠন করা উচিত।

প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলির ফি এবং পরীক্ষার খরচ নির্ধারণ করে একটি সর্বজনীন কাঠামো তৈরি করা উচিত। এতে রোগীদের অর্থনৈতিক শোষণ বন্ধ হবে। হাসপাতালের বিল নির্ধারণে সরকারী নীতিমালা তৈরি এবং তার কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পাশাপাশি, প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তারদের পরামর্শ ফি এবং ওষুধের দাম নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করা গেলে, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কমবে।

চিকিৎসকদের পেশাগত দক্ষতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন তাদের মানবিক গুণাবলি উন্নত করা। রোগীদের প্রতি সহমর্মিতা, ধৈর্য, এবং সদাচরণের অভ্যাস গড়ে তুলতে চিকিৎসকদের জন্য নিয়মিত মানবিকতা এবং নৈতিকতার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে হবে। চিকিৎসকদের মনে রাখতে হবে যে, রোগীদের ভালো ব্যবহার তাদের সুস্থ হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মানবিক আচরণের অভাবে দেশের চিকিৎসা খাতে মানুষের আস্থা কমছে, যা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

বাংলাদেশে mushroom growth-এর মতো বেড়ে ওঠা প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলির মান এবং কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। প্রতিটি ক্লিনিক এবং হাসপাতালের লাইসেন্স যাচাই করে তাদের পরিষেবার মান পর্যালোচনা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীদের আর্থিকভাবে শোষণ বন্ধে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি হাসপাতালের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকেও নিয়মিত মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে।

চিকিৎসা খাতে দুর্নীতি ও প্রতারণার ঘটনাগুলি চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যেমন, রংপুর মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক রিং বসিয়ে তিনটি রিংয়ের টাকা আদায়ের অভিযোগের মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। এই ধরনের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এতে অন্য চিকিৎসকরা অনুপ্রাণিত হবেন সততা বজায় রাখতে এবং চিকিৎসা সেবার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে।

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতের সমস্যা সমাধানে উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি। স্বচ্ছতা, মানবিক আচরণ এবং নৈতিকতার মিশ্রণেই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হতে পারে। মানুষের আস্থা অর্জন করতে হলে চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তাদের মানবিক দায়িত্বও গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে সরকারের কঠোর নজরদারি ও মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে এই খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

দেশের চিকিৎসা খাতকে জনবান্ধব করতে হলে চিকিৎসকদের নৈতিকতা, মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। চিকিৎসা ব্যবসার নামে প্রতারণা বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি, চিকিৎসকদের পেশাগত মানসিকতা পরিবর্তন করে রোগীর সঙ্গে মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। অথচ আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ চিকিৎসা খাত নিয়ে দিনের পর দিন হতাশ হচ্ছে। চিকিৎসা সেবায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার অভাবের কারণে রোগীরা বাধ্য হয়ে বিদেশমুখী হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সময় এসেছে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানবিক ও জনমুখী করে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। তা না হলে “চিকিৎসা সেবা” শব্দটি জনগণের কাছে শূন্য প্রতিশ্রুতির সমার্থক হয়ে দাঁড়াবে।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট