জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় নতুন গ্যাস কূপ খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, নতুন এই কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে, যা জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খনন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আফসানা তাসলিমা।
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কূপটি খনন করা হচ্ছে। কূপটির খনন কাজ ৯০ দিন চলবে, যেখানে বাপেক্সের ২২০ জন প্রকৌশলী ও শ্রমিক অংশগ্রহণ করছেন। গত ১২ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজ শুরু হয়।
কূপটির ড্রিলিং ও রিগ ইনচার্জ মো. রকিবুল হাসান জানান, মাটির নিচে প্রায় ২,৮০০ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করা হবে। অনুসন্ধানের তথ্যানুযায়ী, কূপটির তিনটি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। সফলভাবে খনন শেষ হলে প্রতিটি জোন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। বাপেক্সের তথ্যমতে, এই কূপ থেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
উত্তোলিত গ্যাস সরিষাবাড়ী যমুনা ফার্টিলাইজার কারখানাসহ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়ে অর্থনীতি ও শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামী দুই বছরে সারা দেশে ১০০টি নতুন গ্যাস কূপ খনন এবং ৩১টি পুরোনো কূপ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সচিব আরও জানান, গ্যাস মজুদের জায়গার স্বল্পতার কারণে বৃহৎ পরিমাণে আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকার গ্যাস মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তবে, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে আবাসিক ক্ষেত্রে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না বলেও তিনি জানান।
জামালপুরের নতুন এই গ্যাস কূপ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে, যা শিল্প ও কৃষিখাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করতে কাজ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।