জামালপুর সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পুরোনো ফেরিঘাট থেকে পিয়ারপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে বুলগেট ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে নদীর দুইপারে তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহে শরিফপুর ইউনিয়নের বগালী গ্রামের প্রায় ১০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, টমেটো, করলা, পটল, ধান, ভূট্টা ও রসুনসহ বহু ফসল উৎপাদনের জমি এখন নদীর গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করলে কৃষকদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
বগালী গ্রামের ওমর ফারুক হাফিজুর বলেন, “সরকার পরিবর্তনের পর আবার বুলগেট দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আমার ১০ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।”
হাফিজুরের অভিযোগ, অস্ত্রধারী একটি চক্র নিয়মিত নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সদর ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।
কৃষকের স্ত্রী শুকরিয়া বেগম বলেন, “চাষের জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। আমরা ধান-সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতাম, এখন সন্তানদের পড়াশোনা, খাবার — সব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।”
অপরদিকে বালু উত্তোলনকারী শাহীন ইসলাম বলেন, “যারা অভিযোগ করছে, তারাই আগে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে জোরপূর্বক বালু তুলেছে। এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করছে।”
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি বলেন, “ছনকান্দা থেকে পিয়ারপুর পর্যন্ত সরকার অনুমোদিত আড়াই একর জায়গায় বৈধ বালুমহল রয়েছে। তবে কেউ যদি অনুমোদিত এলাকার বাইরে বালু তোলে, আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার নিয়ে অবৈধ উত্তোলনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।”