জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বনানী কার্যালয়ে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’-এর আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জি এম কাদের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকারের সমর্থন পদদলিত হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিটি জাপার প্রস্তাবনা গ্রহণ করলেও তা অপমানের সঙ্গে করা হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “ঐক্যের চেয়ে প্রতিশোধ সামনে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, “অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার সবার মতামতের ভিত্তিতে কাজ করছে না। বরং প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। এমন অবস্থায় সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।”
জি এম কাদের বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল আর জাপা ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ। তবুও জাতীয় ঐক্য বা সংলাপে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই সিদ্ধান্ত অবিশ্বাস ও সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের মতো একতরফা নির্বাচন করে টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণমূলক।”
জি এম কাদের সরকারের প্রশাসনিক কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলেন, “বর্তমান প্রশাসন জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। তারা সরকারের চেয়ে নিয়োগদাতাদের কথা বেশি শুনছে।”
তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সংস্কার ও নির্বাচন সম্ভব?”
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দল যদি সন্ত্রাসী সংগঠন না হয়, তাদের রাজনীতি বা নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা উচিত নয়।”
জি এম কাদের বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের লোকজন ভোট দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হলে তা টেকসই হবে না।”
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের দিনটি অন্যান্য দল স্বৈরাচার পতন দিবস হিসেবে পালন করলেও, জাতীয় পার্টি ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
সভায় জাপার জ্যেষ্ঠ নেতারা, যেমন মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।