সারাদেশের কারাগারগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার বন্দি ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করছেন। ঈদের দিন সকালে বিশেষ জামাত, উন্নত খাবার ও স্বজনদের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন তারা। বন্দিদের জন্য দিনভর নানা আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে সকাল থেকেই স্বজনদের ভিড় দেখা যায়। দুই বছরের সন্তান কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আসমা বেগম। সকাল ৮টায় এসে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দুই ঘণ্টার অপেক্ষা শেষে তার দেখা মেলে।
একইভাবে আমিনা বেগম এসেছেন কারাবন্দি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার ছেলে বন্দি। গত বছরও ঈদের দিন বাড়িতে ছিল। ছেলে জেলে ঈদ করবে, আমার মন তো বাড়িতে থাকতে পারে না। তাই ছুটে এসেছি।”
বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে স্বজনরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন, বন্দিদের পাশেও কঠোর নিরাপত্তা। মাঝখানের ছোট ফাঁকা জায়গা দিয়ে চোখের দেখা ও কথোপকথন চলে। কান্নায় ভেঙে পড়েন বন্দি ও স্বজনরা।
সাক্ষাতের জন্য বন্দিরা আধা ঘণ্টা সময় পান, যা স্বজনদের জন্য খুবই কম বলে মনে করেন অনেকে।
কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের কারাগারগুলোতে ৬০ হাজার ৯১৪ জন বন্দি রয়েছেন, যেখানে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৪৫০ জন।
বন্দিদের জন্য ঈদের দিনের খাবারে ছিল বিশেষ আয়োজন, সকালে: পায়েস ও মুড়ি, দুপুরে: পোলাও, গরু/খাসির মাংস, রোস্ট, মিষ্টি, কোমল পানীয় ও সালাদ, রাতে: সাদা ভাত, মাছ, বুটের ডাল ও ডিম, ঈদের পরদিন: স্বজনদের বাসা থেকে আনা খাবার (পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, খিচুড়ি, রুটি) বন্দিদের দেওয়া হবে।
এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কাব্য আবৃত্তির আয়োজন রয়েছে। সন্ধ্যায় কারারক্ষীদের জন্যও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কারাগারের নিরাপত্তা সদস্যরা জানিয়েছেন, “অনেক বন্দির স্বজনরা আসতে পারেন না, আবার অনেকের পরিবারই নেই। তারা ঈদের দিনও একাকীত্বে থাকেন।”
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বন্দিদের তিন দিনের জন্য বিশেষ সাক্ষাৎ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে ঈদের পরদিন স্বজনদের ভিড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।