মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ-এ প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করেছে হাইকোর্ট। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন। এর ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃক নগদ-এ প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বৈধ বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গত বছর ২১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ-এ প্রশাসক নিয়োগ দেয়। এর আগে, ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত নগদ-এর আগের পর্ষদ ভেঙে নতুন প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে এক বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হয় এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পর, আইনজীবী আবুল কালাম খান দাউদ বলেন, ‘রিটকারীদের লুকাস স্ট্যান্ড নাই (আইনগত এখতিয়ার নেই), এই গ্রাউন্ডে রিটটি খারিজ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা তা রিটকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় মোবাইল আর্থিক সেবা পরিচালনার জন্য থার্ড ওয়েভ-কে দায়িত্ব দেয়। এরপর ২০১৯ সালে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা হিসেবে নগদ যাত্রা শুরু করে। নগদ বর্তমানে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সময় নিয়ম-কানুন মানেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত কেওয়াইসি (গ্রাহক তথ্য যাচাই) ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের নিজস্ব হিসেবে নিবন্ধিত করে ফেলার সুযোগ পায়।
সরকারি ভাতা বিতরণে নগদ একচ্ছত্র সুবিধা পায় এবং তার গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। নগদ-এর মালিকানায় বিভিন্ন সময়ে যুক্ত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনের স্ত্রী রেজওয়ানা নূর, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, এবং রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।
মোটকথা, হাইকোর্টের রুল খারিজ করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নগদে প্রশাসক নিয়োগ এর বৈধতা নিশ্চিত হয়েছে। তবে, রিটকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।