বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ আটজনকে খালাসের রায় দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
মামলার আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম আদালতে হাজিরা দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলার যুক্তিতর্কে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি এবং তারা খালাসের আবেদন করেন।
২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি দায়ের করে। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়, যেখানে ৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
মামলার আসামিরা হলেন, মওদুদ আহমদ (মারা গেছেন, মামলা থেকে অব্যাহতি), এ কে এম মোশাররফ হোসেন (মারা গেছেন, মামলা থেকে অব্যাহতি), কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন, মীর ময়নুল হক, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সেলিম ভূঁইয়া, কাশেম শরীফ।
দুদকের অভিযোগ ছিল, ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে খালেদা জিয়া ও সংশ্লিষ্টরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডিয়ান কোম্পানি ‘নাইকো’কে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন, এতে প্রায় ১৩,৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হয়।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ আটজনের খালাস পাওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুদক এখন এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।