নারায়ণগঞ্জে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কার্যালয়ে এক দল ডাকাতের হানা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে নগরীর কিল্লারপুল এলাকায় ডিপিডিসির নিজস্ব কার্যালয়ে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
কার্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী এবং লাইনম্যানসহ ভেতরে থাকা ১৪ কর্মচারীর দাবি, ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে নগদ ৫২ হাজার টাকা, ১৩টি মোবাইল ফোন, একটি পুরোনো ট্রান্সফরমার এবং কিছু তামার তার লুট করে নিয়ে যায়।
ডিপিডিসি কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা রাসেল জানান, রাতে নিরাপত্তাকর্মী ও লাইনম্যানসহ মোট ১৪ জন কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। গভীর রাতে একটি ট্রাক এসে কার্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে থামে। কিছু লোক দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে। তারা সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং তাদের কাছ থেকে নগদ ৫২ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে ট্রাকে একটি পুরোনো ট্রান্সফরমার ও তামার তার নিয়ে যায় ডাকাতরা।
ডাকাতির ঘটনাটি পুলিশের কাছে রহস্যজনক বলে মনে হয়েছে। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকটি অসংগতি লক্ষ্য করা যায়। নাইট ডিউটি করা এক কর্মচারী দাবি করেন, লুট হওয়া ৫২ হাজার টাকার মধ্যে তার কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের প্রশ্নে তিনি জানান, বেতনের টাকা তুলেই সঙ্গে রেখেছিলেন।
তাছাড়া, প্রথমে ডাকাতির পরিমাণ হিসেবে ১০ মিটার তামার তার ও একটি ট্রান্সফরমারের কথা বলা হলেও, পরে মামলার এজাহারে দুটি ট্রান্সফরমার এবং একশ মিটার তার লুটের কথা উল্লেখ করা হয়। পুলিশ আরও উল্লেখ করে, ট্রান্সফরমারের মতো ভারী বস্তু নিয়ে যাওয়ার সময় কেউ কোনো প্রতিরোধ করেনি, এমনকি কোনো কর্মচারী আঘাতও পায়নি। এসব বিষয় ঘটনাটিকে সন্দেহজনক করে তুলেছে।
ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাঈম মাহমুদ বলেন, ডাকাতরা ২টি পুরোনো ট্রান্সফরমার, ১০ মিটার তামার তার, একটি টেলিভিশন এবং কর্মচারীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির আহমদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ডাকাতির ঘটনা রহস্যজনক। তবে সিসিটিভি ফুটেজ এবং তদন্তের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ঘটনাটি ঘিরে ডিপিডিসি কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ডাকাতদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা রেখেছে।