বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, কোচ খেলোয়াড়দের যথাযথ সম্মান দেন না, অসম্মানজনক আচরণ করেন এবং তার সিদ্ধান্তের কারণে মাঠের খেলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।
জাতীয় দলের ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন জানান, নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীন এক ঘটনায় কোচের আচরণ তাদের মানসিকভাবে আঘাত করেছে। হোটেলে খাবার খেতে যাওয়ার সময় মাসুরা মাথায় টুপি পরেছিলেন, যা কোচ পিটার বাটলার খুলতে বলেন। কিন্তু তিনি কারণ জানতে চাইলে কোচ বলেন, “আমি কোচ, তুমি খুলবে—এটাই যথেষ্ট।” এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং এর ফলে পরবর্তী ম্যাচে তাকে মাঠে নামানো হয়নি।
খেলোয়াড়দের অভিযোগ, কোচের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মাঠে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে নেপালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে (১-১ গোলে ড্র) তিনটি পরিবর্তন করা হলেও আরও দুটি পরিবর্তনের সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগাননি কোচ। এছাড়া কৃষ্ণা রানী সরকারকে মাঠে নামানোর আগে তার জার্সি নম্বর জিজ্ঞাসা করেও ভুল বোঝাপড়ার কারণে কোচ রেগে যান, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
নারী ফুটবলারদের অভিযোগ, কোচ পিটার বাটলার শুধু মাঠের খেলায়ই ভুল করেননি, বরং মাঠের বাইরেও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।
কোচের এমন আচরণের কারণে খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে চাপে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তিনি বলেন, “কোচের ইগো সমস্যা রয়েছে। সাফ থেকে ফিরে তিনি আমাদের সঙ্গে বসে সমস্যাগুলো সমাধান করেননি।”
নারী ফুটবলারদের মতে, কোচের এসব আচরণ সম্পর্কে সহকারী কোচরা অবগত থাকলেও চাকরি হারানোর ভয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেন না। ফলে পুরো দল একটি মানসিক চাপে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার খেলোয়াড়রা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বাফুফে সভাপতির কাছে, যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে কোচ পিটার বাটলার তাদের মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতি করছেন।
নারী ফুটবলারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কোচের ভূমিকা ও আচরণ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, খেলোয়াড়দের উন্নতির জন্য সমাধান খোঁজা জরুরি। এখন অপেক্ষা, বাফুফে কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে এবং নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে।