নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় ঘটেছে হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। মাত্র ১২ বছর বয়সী এক শিশু দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক বসানোর পর সেই শিশুকে অভিযুক্ত কিশোর ও তার সঙ্গীরা ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছে পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামে। জানা গেছে, শিশুটি তার বৃদ্ধ দাদির সঙ্গে ওই গ্রামে বসবাস করে। শিশুটির বাবা কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান এবং মা পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামে বসবাসকারী নবম শ্রেণির ছাত্র মাহিন মিয়া শিশুটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। শারীরিক পরিবর্তন দেখে বিষয়টি প্রথমে জানতে পারেন শিশুটির খালা। এরপর মেয়েটি মাহিনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে।
বিষয়টি জানাজানি হলে গত শুক্রবার রাতে গ্রামে একটি সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিশুটির পরিবার, অভিযুক্ত মাহিনের পরিবার ও স্থানীয় মাতবররা। কিন্তু বৈঠকের সময় হঠাৎ করেই মাহিনসহ কয়েকজন এসে শিশুটিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তুলেছে শিশুটির দাদি।
তিনি বলেন, “আমার নাতনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মাহিনের পরিবার শুরুতে বিয়ের কথা বললেও এখন বুঝতে পারছি তারা বাচ্চা নষ্ট করে মেয়েটিকে ফেরত দিতে চায়। আমরা গরীব মানুষ, থানায় অভিযোগ করবো কিভাবে তা-ও বুঝি না।”
অভিযুক্ত কিশোরের বাবা আরজু মিয়া বলেন, “বিয়ের সিদ্ধান্ত আমাদের ছিল। কিন্তু এখন দুজনই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা খোঁজ করছি।”
ঘটনার সালিশে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল। তিনি বলেন, “ছেলের পরিবার খুব বাজেভাবে আচরণ করেছে। পরে শুনি, মাহিন মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেছে।”
এ বিষয়ে মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, “ঘটনাটি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। পরিবারকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অলিদুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে এখন খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”