টানা কয়েক দিনের তীব্র শীত ও হিমেল বাতাসে পঞ্চগড় জেলায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শয্যার সংকুলান না হওয়ায় বারান্দার মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার মেরিনা আক্তার তাঁর আট মাস বয়সী সন্তান মুস্তাকিনকে নিয়ে গত রোববার থেকে হাসপাতালে আছেন। শয্যা না থাকায় বারান্দার মেঝেতে রেখে মুস্তাকিনের চিকিৎসা চলছে। মেরিনা জানান, চিকিৎসার পর শিশুটির শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে।
আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শীতের প্রকোপে জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে বর্তমানে ২১৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৩ জন, নারী ১০৫ জন এবং নবজাতক ও শিশু ৫৬টি। সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে আরও ৫ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। শিশু ওয়ার্ডের ২২টি শয্যার বিপরীতে ৪৭টি শিশু চিকিৎসাধীন। নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রটিতে ১১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ১৪ নবজাতক।
সায়দার আলী, পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিতাগ্রাম এলাকার বাসিন্দা, আজ সকালে তাঁর ৮ মাস বয়সী ছেলে সাফিনকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিন দিন ধরে ছেলেটি পাতলা পায়খানা ও বমিতে ভুগছে। হাসপাতালের শয্যা না থাকায় বারান্দার মেঝেতে রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’
হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি। তিনি পরামর্শ দেন, শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে, বাসি খাবার না খাওয়ানো উচিত, শিশুদের নিয়মিত টিকা দিতে হবে, বয়স্ক ব্যক্তিদেরও বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে রোগবালাই ছড়াচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতজনিত রোগ এড়াতে সচেতনতার পাশাপাশি পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি।