পটুয়াখালীতে আতশবাজি পোড়াতে গিয়ে মোহাম্মদ রাফি (৮) নামের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) রাত ৯টার দিকে জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রাফি পৌর নিউমার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী মানির হাওলাদারের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এদিকে, একইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার হকতুল্লা গ্রামে আতশবাজি বিস্ফোরণে আহত হয়েছে দুই কিশোর— মো. বেলাল তালুকদার (১৬) ও তার চাচাতো ভাই মো. রাব্বি (১৫)। তাদের হাত ও চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নয়ন সরকার জানান, আতশবাজির একটি অংশ রাফির শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে মারাত্মক আঘাত করে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
নিহত রাফির মামা আবুল বাশার ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাফি বাড়ির পাশে আতশবাজি ফোটানোর সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। আতশবাজির ধাতব অংশ তার গলা ভেদ করে শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং সে অচেতন হয়ে পড়ে। স্বজনরা দ্রুত রাফিকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে, আহত বেলাল ও রাব্বির ফুফা সিদ্দিকুর রহমান জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা আতশবাজি ফোটানোর চেষ্টা করছিল। এ সময় আতশবাজিটি তাদের হাতে থাকা অবস্থায় বিস্ফোরিত হয়। এতে বেলালের ডান হাতের তালু, আঙুল এবং একটি অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার বাঁ চোখেও গুরুতর আঘাত লাগে। অন্যদিকে, রাব্বির ডান হাতের তালু ও আঙুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আহতদের দ্রুত পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।
সিদ্দিকুর রহমান জানান, চিকিৎসকেরা বলেছেন, বেলালের হাতের একটি অংশ কেটে ফেলতে হতে পারে। তাই দ্রুত তাদের বরিশালে নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনার পর আতশবাজির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতশবাজির ব্যবহার সীমিত করা এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।