পটুয়াখালী সদর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গৃহবধূ নূরজাহান বেগম (৪০)-কে কুপিয়ে হত্যা করার পর তাঁর স্বামী নূর মোহাম্মদ হাওলাদার (৫০) থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। শনিবার (৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দুইটার দিকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বলইকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নূরজাহানের ছেলে বেলাল হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। বিভিন্ন সময়ে তাঁর বাবা নূর মোহাম্মদ মাকে মারধর করতেন এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দিতেন। ঘটনার রাতে হঠাৎ মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে ওঠেন বেলাল ও তাঁর স্ত্রী। ঘরে এসে দেখেন মেঝেতে নূরজাহান রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং পাশে একটি ধারালো ছুরি পড়ে আছে। তবে এ সময় ঘরে তাঁর বাবা ছিলেন না।
ঘটনার পর নূর মোহাম্মদ হাওলাদার পটুয়াখালী সদর থানায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করতেন।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘আসামি নূর মোহাম্মদ স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন এবং তিনি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’
নিহত গৃহবধূর পরিবারের দাবি, টাকার জন্য চাপ দেওয়া ও পারিবারিক কলহ এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক অশান্তি চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। মামলার তদন্ত চলমান এবং অভিযুক্তকে দ্রুত আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
এ হত্যাকাণ্ড এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পারিবারিক কলহ ও সহিংসতা যে কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, এ ঘটনা সেটিরই উদাহরণ।
পরিবারের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি এবং আর্থিক চাপের কারণে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পরিবারগুলোর মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।