বলিউড এবং টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী উপাসনা সিং সম্প্রতি কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ ভারতের এক নামী পরিচালকের অশোভন প্রস্তাব এবং তার সাহসিক প্রতিক্রিয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।
‘ম্যায় প্রেম কি দিওয়ানি হু’, ‘কপিল শর্মা শো’, ‘কমেডি নাইটস উইথ কপিল’-এর মতো জনপ্রিয় শো-এ অভিনয় করে উপাসনা সিং ভক্তদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তবে অভিনয় জীবনে এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন, যা তাকে দীর্ঘদিন মানসিকভাবে কষ্ট দিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে পরিচালকের নাম উল্লেখ না করে উপাসনা জানান, সিনেমায় অনিল কাপুরের বিপরীতে তাকে নেওয়া হয়েছিল। তবে একদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই পরিচালক তাকে ফোন করে বলেন, সিনেমার গল্প নিয়ে আলোচনার জন্য তার হোটেলে যেতে হবে।
উপাসনা তখন বলেন, ‘আমি পরের দিন গল্প শুনে নেব।’ তবে সেই সময় তার কাছে কোনো গাড়ি ছিল না। এরপর পরিচালক তাকে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেন, ‘আলোচনা মানে আমি কী বলছি বুঝতে পারছ না তুমি?’
পরের দিন সকালে উপাসনা পরিচালকের বান্দ্রার অফিসে যান। সেখানে তিন-চারজনের সঙ্গে মিটিং করছিলেন ওই পরিচালক। তার ম্যানেজার উপাসনাকে বাইরে অপেক্ষা করতে বললেও তিনি সরাসরি রুমে প্রবেশ করেন। এরপর সবার সামনে পাঁচ মিনিট ধরে পরিচালকের উদ্দেশে গালাগাল করেন।
উপাসনা বলেন, ‘আমি যা বলার তা বলে দিয়েছি। তবে অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ভেতরটা ফাঁকা লাগছিল। আমি তো অনেককেই বলে দিয়েছিলাম যে, আমি অনিল কাপুরের সঙ্গে সিনেমায় কাজ করছি। সেই সময় ফুটপাথ ধরে হাঁটার সময় কান্না চেপে রাখতে পারছিলাম না।’
এ ঘটনার পর টানা সাত দিন নিজেকে গৃহবন্দি করে রাখেন উপাসনা। তবে সেই সময় তার মায়ের সাহসই তাকে নতুন শক্তি জোগায়। তিনি বলেন, ‘সেই সাত দিনই আমার জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর ভিত হয়ে ওঠে। মা সব সময় পাশে ছিলেন। তার কথা ভেবেই আমি ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার সিদ্ধান্ত নিই।’
উপাসনা সিং ছাড়াও বলিউডের অনেক অভিনেত্রী ও অভিনেতা কাস্টিং কাউচের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। কঙ্গনা রানাউত, তাপসী পান্নু, ঋচা চাড্ডা এবং বিদ্যা বালানও কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাদের মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে এ নিয়ে সরব হচ্ছেন, যা এই ধরনের অপকর্ম বন্ধ করতে ভূমিকা রাখছে।