পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজ তোলার কাজ শুরু হলেও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অনেক কৃষক। এর ফলে ফলন প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের পাশাপাশি মু’রিকাটা পেঁয়াজও বাজারে আসায় পেঁয়াজের দাম দ্রুত কমছে। গত ১৫ দিনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মাগুরার লাঙ্গলবাঁধ ও কুষ্টিয়ার পান্টি মোকামে মণপ্রতি প্রায় ২ হাজার টাকা কমেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বিভিন্ন জেলায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের পরিসর ছিল নিম্নরূপ, যশোর: ৫১৭ হেক্টর, ঝিনাইদহ: ৩৯৩ হেক্টর, মাগুরা: ২৬০ হেক্টর, কুষ্টিয়া: ৪৯৪ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গা: ১৬৫ হেক্টর, মেহেরপুর: ১,৯০০ হেক্টর, বর্ষাকালীন পেঁয়াজও কিছু কিছু জেলায় উঠতে শুরু করেছে, যা বাজারে নতুন সরবরাহ বাড়াচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার তেরঘরিয়া গ্রামের চাষি জিয়াউর রহমান জানান, এবার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ বেড়েছে। চাষ ভালো হলেও অতিবৃষ্টির কারণে গাছের বড় ক্ষতি হয়েছে। তবে বিঘাপ্রতি ৬০ মণের মতো ফলন হচ্ছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের চাষি কবির মোল্লা জানান, কৃষি বিভাগের প্রদর্শনী প্লটে ১০ কাঠা জমিতে নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তার জমিতে গুটি নামতে শুরু করেছে এবং তিনি ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন।
মেহেরপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, বর্ষাকালীন পেঁয়াজের ফলন তুলনামূলক ভালো হলেও অতিবৃষ্টির কারণে কিছু গাছ মরে গেছে। বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারি বাজারে এই পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন চাষিরা।
ঝিনাইদহ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টিচন্দ্র রায় বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ বাড়ছে এবং চাষিদের ফলন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিঘায় ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সার ও নগদ ২ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা বাজারে গত বছরের মজুত পেঁয়াজ মঙ্গলবার পাইকারি প্রতি মণ ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মাত্র ১৫ দিন আগে এই দাম ছিল ৫ হাজার ৪০০ টাকা। গ্রীষ্মকালীন ও বর্ষাকালীন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি পেলেও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগের সহায়তা ও বাজারে নতুন পেঁয়াজ সরবরাহ বাড়ায় চাষিদের আস্থা পুনরুদ্ধার হতে পারে। বাজারের দাম স্থিতিশীল রাখতে এবং কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।