২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার ঘোষণা দেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত টানা ১,০০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান এই সংঘাতে উভয় পক্ষের অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে যুদ্ধ বন্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বরং সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা হামলার মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। পাল্টা জবাবে রাশিয়া কঠোর প্রতিশোধের বার্তা দিয়েছে। এর মধ্যেই যুদ্ধ থামানোর জন্য কূটনৈতিক আলোচনার প্রস্তাব এসেছে। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এটি নির্দিষ্ট শর্তের ওপর নির্ভর করছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে এতে কিছু শর্ত দিয়েছেন, যা রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানকেই প্রতিফলিত করে। পুতিনের শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা পরিত্যাগ করতে হবে, রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ডগুলো নিয়ে বড় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চল ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
রাশিয়ার সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের মতে, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় কোনো চুক্তি হলে রাশিয়া সম্মুখসারির যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে। খারকিভ ও মিকোলাইভের কিছু এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়েও ক্রেমলিনের সম্মতি থাকতে পারে। তবে যদি কোনো চুক্তি না হয়, রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সূত্র।
যুদ্ধ বন্ধের জন্য পুতিন-ট্রাম্প আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে রাশিয়ার শর্তগুলো কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ত্যাগ করবে কিনা এবং রাশিয়ার দাবি করা ভূখণ্ডগুলো নিয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
যুদ্ধের এই দীর্ঘায়িত পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। তবে পুতিনের শর্ত ও ট্রাম্পের মধ্যস্থতার সম্ভাব্য উদ্যোগ সংঘাত নিরসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে দুই পক্ষের সমঝোতার সক্ষমতার ওপর। পুতিনের শর্ত এবং ট্রাম্পের ভূমিকা কেবল সংঘাত নিরসনে একটি পথ নির্দেশ করতে পারে, তবে এটি কতটা টেকসই হবে, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।