সাভারের আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে বকেয়া বেতনের দাবিতে লেনী ফ্যাশনস এবং লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং এলাকাজুড়ে তীব্র ভোগান্তি তৈরি হয়।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, চার বছর আগে লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস নামের দুটি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ওই দুই কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) কারখানাগুলো বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। শ্রমিকদের অভিযোগ, একটি কারখানা বিক্রি করে অর্থ ব্যাংকে জমা দেওয়া হলেও তাদের বেতন পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করেন। রাত ৯টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) পুরোনো অংশের ফটকের সামনে অবস্থান নেন। সারা রাত অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পর বুধবার সকালে আবারও তারা মহাসড়কে ফিরে আসেন।
সকালে ডিইপিজেডের অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গেলে তাদের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে অন্যান্য শ্রমিকদের কাজ শুরু করতে সমস্যা হয়।
বিক্ষোভরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম জানান, মহাসড়ক অবরোধের ফলে যানবাহনগুলো বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছে। নবীনগর থেকে ধামরাই-ঢুলিভিটা হয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করছে।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, “কারখানা বিক্রির আইনি প্রক্রিয়া চলছে। যখনই লেনী ফ্যাশন কারখানাটি বিক্রি করা সম্ভব হবে, শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। বিক্ষোভরত শ্রমিকদের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানানো হচ্ছে এবং তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে।”
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভরত শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, “বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে। আমরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
বেপজা এবং ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর সমস্যার সমাধানের আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে মহাসড়কে যান চলাচল এখনও ব্যাহত এবং শ্রমিকদের আন্দোলন চলছে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের এই আন্দোলন এলাকাজুড়ে বিপত্তি সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে শ্রমিকদের দাবি মেটাতে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম না নেওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা প্রশমিত হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।