২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ক ক্রমেই নতুন মোড় নিচ্ছে। নির্বাচনে পরাজিত দুই প্রার্থী—জাতীয় পার্টির (জাপা) ইকবাল হোসেন তাপস এবং ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম—নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ইকবাল হোসেন তাপস বুধবার বরিশাল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। তার দাবি, নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠু হলে তিনি বিজয়ী হতেন। তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দলীয় কর্মীদের এনে শহরে জড়ো করেন এবং ভোটের দিন সব কেন্দ্র দখলে রাখেন।
তাপস অভিযোগ করেন, ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোটারদের নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়। তিনি নিজে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাউনিয়া শের-ই-বাংলা বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে একজন বহিরাগতকে হাতেনাতে ধরলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন।
উল্লেখ্য, তাপস ওই নির্বাচনে ৬ হাজার ৬২৫ ভোট পেয়েছিলেন। বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ পেয়েছিলেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট, এবং তাকেই মেয়র হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাত ভাই।
তাপসের আইনজীবী আব্দুল জলিল জানান, মামলার শুনানির বিষয়ে আদালত পরবর্তী তারিখে সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে তারিখ নির্ধারিত হয়নি।
এর আগে, ১৭ এপ্রিল ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এবং দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমও একই দাবি করে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। তার পক্ষে ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট দেখানো হয়েছিল। তার মামলাটি গ্রহণযোগ্য হবে কিনা সে বিষয়ে আদালত বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত জানাবে।
ইতোমধ্যেই ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণার দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেছে। সাধারণ নাগরিক ব্যানারে গত শুক্রবার থেকে বরিশাল নগরীতে ধারাবাহিক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। আজ বিকেলেও সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে একটি পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।