বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সম্প্রতি জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম সোলার প্যানেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোংগি বাংলাদেশে একটি অফিস স্থাপন এবং সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, “চীনের বেশ কয়েকটি শীর্ষ সোলার প্যানেল নির্মাতা ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করে বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধান করেছিল, যার ফলস্বরূপ লোংগি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অফিস ও কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
রবিবার (১৬ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এই তথ্য জানান চীনের রাষ্ট্রদূত। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “বাংলাদেশ সফরকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্তত দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান শিগগিরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস চীনা কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং এটি চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য উৎপাদন কেন্দ্র হতে পারে, বিশেষ করে যেসব কোম্পানি পশ্চিমা দেশগুলোতে পণ্য রফতানি করতে চায়।”
ইয়াও ওয়েন আরও জানান, চীনের একটি নিবেদিত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল শিগগিরই কাজ শুরু করবে এবং এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন আনুষ্ঠানিক সফরকে “দুই বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মধ্যে ৫০ বছরের দীর্ঘ সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস শীঘ্রই চীনে সফর করবেন এবং সেখানে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তাঁর সফরের সময় ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে এশিয়া: অভিন্ন ভবিষ্যতের দিকে’ শীর্ষক বক্তৃতা দেবেন, যেখানে চীনের নির্বাহী ভাইস প্রিমিয়ারও উপস্থিত থাকবেন।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বৈঠকের শেষে দুই দেশ একটি যৌথ বিবৃতি দেবে, যা বাংলাদেশের জন্য চীনা বিনিয়োগের আরও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
চীনা হাসপাতাল চেইনগুলোকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে যৌথ উদ্যোগে হাসপাতাল নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং চীনের হাসপাতাল চেইনগুলোর জন্য এটি একটি অনন্য সুযোগ।”