৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে শুরু হয় রাজনৈতিক পালাবদল। দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার প্রভাব পড়ে দেশের প্রশাসনিক ও ক্রীড়া অঙ্গনেও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর নেতৃত্বেও আসে পরিবর্তন। নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ।
দায়িত্ব নিয়েই তিনি চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে প্রধান কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেন। তবে কোচ হাথুরুসিংহের বাংলাদেশ ছাড়ার প্রক্রিয়া ছিল নাটকীয় এবং আতঙ্কে ঘেরা—যা তিনি সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া মাধ্যম ‘কোড স্পোর্টস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেন।
২০২৩ সালের ভারত বিশ্বকাপ চলাকালীন স্পিনার নাসুম আহমেদকে শারীরিকভাবে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে হাথুরুর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আরও কিছু আচরণগত অনিয়মের অভিযোগে বিসিবি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। যদিও তিনি পরদিনই জবাব পাঠান, সেটিকে “অগ্রহণযোগ্য” বিবেচনায় এনে বিসিবি চুক্তি বাতিল করে দেয়।
হাথুরুসিংহে বলেন, “বাংলাদেশের সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আমাকে বলেছিলেন, ‘আপনার এখান থেকে চলে যাওয়া উচিত। কারও সঙ্গে কিছু বলার দরকার নেই। আপনার কাছে কি বিমানের টিকিট আছে?’ এটা আমার কাছে সতর্কবার্তা মনে হয়েছিল।”
এরপর তিনি ব্যাংকে গিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করেন। তখনই টিভিতে আসে ব্রেকিং নিউজ—“চন্ডিকা চাকরিচ্যুত, একজন খেলোয়াড়কে লাঞ্ছিত করেছেন”।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হাথুরুকে বলেন, “কোচ, আমি আপনার সঙ্গে যাব। মানুষ আপনাকে রাস্তায় চিনে ফেললে সেটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে না।”
তিনি জানান, “আমি এক বন্ধু নিয়ে বিমানবন্দরে যাই। টুপি ও হুডি পরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ছাড়া সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের মধ্যরাতের ফ্লাইটে বাংলাদেশ ত্যাগ করি।”
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “আমি আতঙ্কে ছিলাম, ভাবছিলাম যদি তারা আমাকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করে! এমনও ঘটনা ঘটেছে—আগের সরকারের একজন মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালাতে গেলে রানওয়েতে বিমান থামিয়ে তাকে নামিয়ে আনা হয়েছিল।”
হাথুরুসিংহের এই বক্তব্য বিসিবি এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। বিসিবির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।