বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শহীদ নাজমুল আহসান হল থেকে তিন বস্তা ফুল চুরির অভিযোগে তিন শিক্ষার্থী শাস্তির মুখে পড়েছেন। চুরি করা ওই ফুলগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের পেছনে অবস্থিত ‘ভক্তি কুটির ইসকন মন্দিরে’ পুষ্পাঅভিষেক পুজায় ব্যবহার করা হয়।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে শহীদ নাজমুল আহসান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কাজী কামরুল ইসলাম ইসকন মন্দিরে সরেজমিনে গিয়ে চুরিকৃত ফুল শনাক্ত করেন। এ সময় তিনি একজন শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। এরপর বাকি দুই অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে প্রক্টরের কাছে হাজির করা হয়।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীই তাদের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার অঙ্গীকার করেন।
শহীদ নাজমুল আহসান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, “সকালে হলের গার্ডরা ফুল চুরির বিষয়টি আমাকে জানায়। খোঁজ নিতে গিয়ে ইসকন মন্দিরে সেই ফুল শনাক্ত করি। সেখানে একজন শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয়। তিন শিক্ষার্থী মিলে হলের বাগান থেকে তিন বস্তা ফুল চুরি করে এবং তা মন্দিরের পুজায় ব্যবহার করে। একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চুরি করা জিনিস দিয়ে করা যায় না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধির ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শহীদ নাজমুল আহসান হলের এক শিক্ষার্থীকে জরিমানা করা হয়েছে। বাকিদের ছাত্রত্ব না থাকায় তাদের হলে থাকার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
শামসুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমার হলের দুই শিক্ষার্থী এ ঘটনায় জড়িত ছিল। তাই তাদের রুম তালাবদ্ধ করা হয়েছে এবং হলে থাকার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম বলেন, “ধর্মীয় প্রার্থনা চুরি করা জিনিস দিয়ে হতে পারে না। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা পরিণত বয়সের এবং এ ধরনের কাজ ক্ষমার অযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার মাধ্যমে বাকৃবি প্রশাসন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, ধর্মীয় বা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি সম্মান রক্ষা করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।