প্রতি বছরের মতো এবারও জানুয়ারি মাসে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির হিড়িক দেখা গেছে। তবে কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির চাপ সামাল দিতে শিক্ষকরা হিমশিম খাচ্ছেন, অন্যদিকে কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকটের কারণে শিক্ষকদের অভিভাবকদের বাড়িতে গিয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুশীল সমাজের লোকজন।
বাউসা অমরপুর ধন্দহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক কামরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন যে, তাদের পাশেই অবস্থিত হারুন অর রশিদ শাহদ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫৫ জনের বিপরীতে ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এই অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি কীভাবে সম্ভব হলো এবং সরকারিভাবে তারা বই পেল কীভাবে?
অন্যদিকে, বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে একই শ্রেণিতে ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই পরিস্থিতির পেছনে বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ও শিক্ষকদের গাফিলতি বড় ভূমিকা পালন করেছে।
রহমতুল্লাহ বালিকা বিদ্যালয় ও ইসলামী একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে ডাবল শ্রেণিকক্ষ খোলা না থাকায় নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ আছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষকরা নিশ্চিত করেছেন যে, সরকারি অনুমতি না পাওয়ায় তারা ডাবল শাখা খুলতে পারেননি।
বাউসা হারুন অর রশিদ শাহদ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা কোনো শ্রেণিতেই ডাবল (ক-খ) শাখা খোলার অনুমতি পাইনি। কিন্তু অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ভর্তি নিতে বাধ্য হয়েছি।’ তিনি স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিদ্যালয়ে প্রতি ক্লাসেই প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।
বাঘা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ.ফ.ম. মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, ‘আমি বাউসা হারুন অর রশিদ শাহদ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলে দিয়েছি তারা আর শিক্ষার্থী ভর্তি করবে না। সরকারি অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত কোনো বিদ্যালয় প্রতি ক্লাসে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। আর যদি সেটি করতে হয়, তাহলে ডাবল শাখা খোলার অনুমতি লাগবে।’
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির চাপ বেশি, অন্যদিকে কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকট প্রকট। শিক্ষার্থীদের সুষম বণ্টন এবং বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।