রাজনৈতিক অঙ্গনে এক চাঞ্চল্যকর পালাবদল ঘটেছে, যেখানে ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের মামা, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান, গত আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে তার এই স্থানান্তর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
এক সময়ের প্রভাবশালী এই আওয়ামী লীগ নেতা, যিনি উত্তরার রাজনীতিতে বেশ পরিচিত ছিলেন, এখন বিএনপির নানা কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি বিমানবন্দর এলাকায় আয়োজিত শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে তাকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এটি স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, কারণ তারা মনে করছেন, এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর এখন কেবল বিএনপির মিছিলে যোগ দিয়েই নিজেকে বিপদমুক্ত করতে চাইছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাবিবুর রহমান এক সময় বৃহত্তর ঢাকা-৫ আসনের (বর্তমানে ঢাকা-১৮ আসন) আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এ কে এম রহমত উল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ছিলেন। এই সময় তিনি এলাকাতে চাঁদাবাজি এবং ত্রাসের সৃষ্টি করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব হাসান এমপির সঙ্গে যুক্ত হন এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখেন। তবে ৫ আগস্টের পর তিনি সরকার পরিবর্তন ও বিএনপির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেছেন, যা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
অতিরিক্ত অভিযোগ রয়েছে, হাবিবুরের বিরুদ্ধে এক সময়ের কুখ্যাত গোল্ড মাফিয়া মুরগি মিলনকে খুন করানোর অভিযোগও রয়েছে। বলা হচ্ছে, সোনা চোরাচালানে জড়িত এই মাফিয়া সদস্যকে হত্যার জন্য সন্ত্রাসী ভাড়া করে তিনি এটি ঘটান, যেটি পরবর্তীতে তাকে কারাবরণও করাতে পারে।
এছাড়াও, বিএনপির নেতাদের মধ্যে কিছু অভিযোগ উঠেছে যে, হাবিবুর রহমান তার অর্থ ও প্রভাব খরচ করে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। বিমানবন্দর ও দক্ষিণখান এলাকায় বিএনপির মিছিলে তাকে প্রথম সারিতে অংশ নিতে দেখা গেছে, যা অনেক নেতার মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
তবে, হাবিবুর রহমান নিজে তার রাজনৈতিক অতীত অস্বীকার করে দাবি করেছেন যে, তিনি আর রাজনীতি করেন না এবং ১০ বছর ধরে কোনো মিটিং বা মিছিলে অংশ নেননি। গোল্ড মাফিয়া মুরগি মিলনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকার বিষয়টি তিনি স্বীকার করলেও সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
এই পালাবদল এবং বিতর্কিত অতীত নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, এবং তার কর্মকাণ্ড আগামী দিনগুলোতে আরও বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।