রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক স্মরণসভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘মুনাফিক’ মন্তব্য করায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এক বিবৃতিতে এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “বিএনপি নেতা রিজভীর এই বক্তব্য জাতীয় ঐক্যবিরোধী ও দুরভিসন্ধিমূলক। দেশবাসী মনে করে, এ ধরনের বক্তব্য সৌজন্যতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।”
তিনি আরও বলেন, রিজভী আহমেদ জামায়াত সম্পর্কে যেসব মন্তব্য করেছেন, তা সম্পূর্ণ আপত্তিকর, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক স্মরণসভায় রুহুল কবীর রিজভী বলেন— “আমরা জামায়াতকে সমর্থন করিনি। বিএনপির উদারতার কারণে তারা বাংলাদেশে প্রথম রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সব সময় এই দলটি মুনাফেকি করেছে। মুনাফেকি ছাড়া তারা কিছু করেনি।”
এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর জামায়াতের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয় এবং এই ধরনের মন্তব্যকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করা হয়।
জামায়াত নেতা আকন্দ বলেন, “জামায়াতে ইসলামী কখনো কারো সঙ্গে মুনাফেকি করেনি। আমরা দেশের মানুষের অধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই করে যাচ্ছি। রিজভীর কথার কোনো ভিত্তি নেই।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত সব সময় ভারতের আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আমাদের এই অবস্থান গোটা জাতি গ্রহণ করেছে, আর সে কারণেই সম্ভবত রিজভীর গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে।”
জামায়াতের মতে, বিএনপি নেতার এই মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। আকন্দ বলেন, “দেশকে যখন ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা, সেই মুহূর্তে রিজভীর এই বক্তব্য বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়।”
তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভ্রান্তিকর ও অপবাদমূলক রাজনীতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির শীর্ষ নেতার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। জামায়াত একে ‘জাতীয় ঐক্যবিরোধী’ বলে অভিহিত করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক জোটগুলোর মধ্যে বিভক্তি দূর করতে পারস্পরিক সমঝোতার প্রয়োজন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।