বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বাংলাদেশের কাছে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার মতো দুর্দান্ত সব আইডিয়া আছে।” তিনি মনে করেন, ব্যবসাই হতে পারে পৃথিবী পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড (বিডা) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। যদিও চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হয়েছে ৭ এপ্রিল, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আজ ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে ব্যবসার ভালো সুযোগ রয়েছে। এ ব্যবসা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্যও সুযোগ তৈরি করতে পারে।” তিনি ক্ষুদ্রঋণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এটি একসময় একটি ক্ষুদ্র গ্রামে শুরু হলেও এখন তা আমেরিকার অন্যতম বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
বক্তব্যের একপর্যায়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধান উপদেষ্টা। কিছু সময় তিনি চুপ করে থাকেন এবং এরপর বক্তব্য চালিয়ে যান।
ড. ইউনূস বলেন, “দুনিয়া বদলাতে চাইলে ব্যবসা সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠামো।” তিনি আরও বলেন, “সবাই মিলে উপার্জন করে মানুষের ভাগ্য বদল করাটা স্বর্গীয় অনুভূতি। কার্বন নিঃসরণ বাদ দিয়ে আমরা নতুন সভ্যতা গড়তে পারি। কারণ, বর্তমান সভ্যতা আত্মবিধ্বংসী।”
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, “তরুণ প্রজন্ম সম্মিলিতভাবে পৃথিবীকে বদলে দেবে। তারা সরকারের অপেক্ষায় বসে থাকবে না। সেই নতুন বিশ্ব গড়তে এখন থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে।” তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগকে শুধু অর্থনৈতিক কার্যক্রম হিসেবে নয়, বরং একটি বৈশ্বিক সামাজিক ব্যবসার অংশ বলেও উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নতির জন্য একটি কার্যকর ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করলেই সম্ভব দারিদ্র্য বিমোচন। আর এই লক্ষ্য পূরণের জন্য বাংলাদেশ সামাজিক ব্যবসার আদর্শ স্থান।”