দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান। তিনি জানান, রিজার্ভের বর্তমান অবস্থা “সন্তোষজনক” এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর শর্ত পূরণে বাংলাদেশ আশাবাদী।
আরিফ হোসেন খান আরও জানান, IMF-এর ঋণপ্রাপ্তির গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে জুনের মধ্যে নিট রিজার্ভ (NIR) ১৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে হবে। বর্তমানে নিট রিজার্ভ রয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলার পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
এছাড়া IMF-এর বিপিএম-৬ (BPM6) পদ্ধতিতে হিসাব অনুযায়ী এখন দেশের প্রকৃত রিজার্ভ প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার।
➤ ১২ এপ্রিল ২০২৫: গ্রস রিজার্ভ: ২৬.১৫ বিলিয়ন ডলার, IMF হিসাব (BPM6): প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার
➤ ৬ এপ্রিল ২০২৫: গ্রস রিজার্ভ: ২৫.৬২ বিলিয়ন ডলার, BPM6 রিজার্ভ: ২০.৪৬ বিলিয়ন ডলার
➤ ২৭ মার্চ ২০২৫: গ্রস রিজার্ভ: ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার, BPM6 রিজার্ভ: ২০.৩০ বিলিয়ন ডলার
রিজার্ভের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে আশার আলো দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুধুমাত্র মার্চ মাসেই দেশে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এই বিপুল অর্থ প্রেরণ সরাসরি রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
নিট রিজার্ভ হিসাব করা হয় IMF-এর BPM6 মডেল অনুযায়ী। এখানে মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে প্রকৃত বা নিট রিজার্ভ নির্ণয় করা হয়।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ স্পষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই IMF-এর শর্ত পূরণ করে প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত থাকলে আগামীতে রিজার্ভ আরও বাড়তে পারে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।