ঢাকার মহাখালী, আগারগাঁও ও বসিলা এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সড়কে রিকশা চালানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁরা এই আন্দোলন শুরু করেন। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে চালকেরা মিছিল ও স্লোগানে উত্তাল করেছেন পুরো এলাকা।
মহাখালীতে সকাল ৯টা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা রেললাইনে রিকশা আড়াআড়ি রেখে রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি মহাখালী সড়কেও অবরোধ করেন তাঁরা। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ঢাকা রেলওয়ে পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, অবরোধের কারণে রেলপথের পাশাপাশি মহাখালী ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
আগারগাঁওয়ে শত শত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক সড়কে নেমে অবরোধ করেন। তাঁরা মিছিল করে সড়ক দখল করে রাখেন। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজম বলেন, “চালকদের এই বিক্ষোভের কারণে আগারগাঁও ও সংলগ্ন সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।”
একই সময় বসিলার চৌরাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা সড়কে নেমে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। অবরোধের ফলে পুরো এলাকার সড়ক পরিবহন কার্যত অচল হয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলে তিন দিনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেন। এ সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের মৃত্যুর ঘটনা। ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় তিনি নিহত হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা দাবি করছেন, তাদের জীবিকার পথ বন্ধ করা হয়েছে। অনেক চালক জানিয়েছেন, হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে তাঁরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়বেন। সড়ক অবরোধের মাধ্যমে তাঁরা দাবি তুলেছেন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের।
সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিলেও এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ এবং হাইকোর্টের নির্দেশনার মধ্যে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা এখন গুরুত্বপূর্ণ। জনজীবনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চালকদের আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।