পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠানোর কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিবিদরা সবসময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। উনি (মমতা) এই বক্তব্য কেন দিলেন তা আমার কাছে অস্পষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির জন্য সহায়ক হবে কিনা, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রের নেতৃত্বে একটি ভারতীয় প্রতিনিধিদল চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) পরবর্তী পর্বে যোগ দিতে ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক টানাপোড়নের কারণে এফওসি আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এফওসি প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, “এফওসি হওয়ার কথা। আমি মনে করি, এটি হবে। তবে, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।”
ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকা নিয়ে তিনি বলেন, “ভিসা বন্ধ থাকার কারণে অনেক বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে পারছেন না। একইসঙ্গে কলকাতার ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটি ভারতের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কিনা, তা তাদের বিবেচনা করতে হবে।”
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে তিনি বলেন, “পারস্পরিক স্বার্থ ঠিক রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে স্বাভাবিক ও ভালো সম্পর্ক চাই।”
ভারতের আন্তরিকতা বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, “অন্তরের আন্তরিকতা পরিমাপ করা কঠিন। গণমাধ্যমকেই এটি বিচার করতে হবে। তবে, উভয় দেশের জন্য স্বার্থই প্রধান।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, উভয় দেশ নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী সম্পর্ক এগিয়ে নেবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী প্রস্তাবনা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দুই দেশের কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ এ পরিস্থিতি কীভাবে সামলাবে, তা সময়ই বলে দেবে।