স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, দেশে মিথ্যা মামলা বেড়ে গেছে এবং এটি কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না। তিনি জানান, ‘‘যে কেউ যদি মিথ্যা মামলা দায়ের করে, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’’
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সিলেট সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় যে কাজ চলছে, তাতে নানা সমালোচনা এবং প্রতিবন্ধকতা আসবেই, কিন্তু কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’’ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘কাজ করার সময় নানা ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়, কিন্তু সবাইকে পরিস্থিতি বুঝে তা মোকাবিলা করতে হবে।’’
সভায় মিথ্যা মামলার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ানোর পেছনে চাঁদাবাজির ভূমিকা রয়েছে। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং এ ব্যাপারে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, ‘‘সম্প্রতি পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হয়েছে এবং এটি অব্যাহত রাখতে হবে। নিয়োগ ও পোস্টিং বাণিজ্য আর বরদাশত করা হবে না।’’ তিনি এ সময় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করার নির্দেশনা দেন।
এছাড়া, তিনি মব জাস্টিস বা গণপিটুনি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এবং শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে পুনরায় অপকর্মে জড়ালে তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেন।
ঢাকার মোহাম্মদপুরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘যদি সবাই একযোগে কাজ করে, তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যাদের কাছে অপরাধের তথ্য রয়েছে, তারা তা অন্যদের সহযোগিতা করার জন্য শেয়ার করবেন।’’
তিনি জানান, ‘‘মিথ্যা মামলা এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। যারা ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করছে তারা এসব কাজে জড়িত নয়।’’ পাশাপাশি, পুলিশ ও র্যাবের প্রতি তিনি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দেন এবং ‘‘মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করে ক্ষোভ কমানোর’’ বিষয়েও গুরুত্ব দেন।
উপদেষ্টা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। যদি কেউ পরিচয় জানতে চায়, তবে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অকারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না এবং কেউ যদি অবৈধ আদেশ দেয়, তবে তা পালন করবেন না।’’
সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের কমিশনার, সশস্ত্র বাহিনী, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ।