বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন সময়ে পাশে থাকার জন্য মিনা ফারাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মিনা ফারাহ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিনা ফারাহ তার পোস্টে লিখেছেন, “সত্যের পক্ষে কাজের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানাতে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ফোন করেছেন।” পোস্টের সঙ্গে তিনি তাদের ফোনালাপের চার মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও যুক্ত করেন।
ফোনালাপে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যোদ্ধা হিসেবে নয়, একজন সেনাপতি হিসেবে (ভূমিকা পালনের জন্য) আপনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাকে এই কৃতজ্ঞতা জানাতে অনেক দেরি করে ফেললাম। এজন্য আমাকে ক্ষমা করবেন। দলের পক্ষ থেকে, আমার পক্ষ থেকে এবং বাংলাদেশে আমরা যারা মজলুম বসবাস করি তাদের সকলের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের কঠিন সময় যখন কেউ দাঁড়ায়নি তখন আপনি আমাদের পাশে ছিলেন। আপনার এই ঋণ আমরা কোনোদিন পরিশোধ করতে পারবো না।”
মিনা ফারাহ জামায়াত আমিরকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে বলেন, “জামায়াতের এত বড় একটি জায়গায় থেকে আপনি আমাকে ফোন করেছেন, এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আজকে আমি খুব শান্তি পাচ্ছি। ২০১১ সালে অত্যাচারী স্বৈরাশাসকের বিরুদ্ধে প্রথম লেখার সময় আমার বাড়িঘর ব্লক করে দেওয়া হয় এবং আমার দেশে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত নেতা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষী না দেওয়ায় আমাকে এত হয়রানি করা হয়েছে। আমি দেশে যেতে চাই এবং তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে চাই। ইন্টারপোলের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে ফিরিয়ে এনে তাদের গণহত্যার বিষয়ে মুখোমুখি করা হোক। শেখ হাসিনার গণহত্যার বিষয়ে আমি একজন সাক্ষী।”
মিনা ফারাহ উল্লেখ করেন যে, “কামরুজ্জামান মানুষ মারে নাই। আমি মিথ্যা সাক্ষী না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এসব বিচারের জন্য একটি ট্রাইবুনাল গঠনের আহ্বান জানাই।”
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান তাদের কথোপকথনের শেষে বলেন, “আমরা সেই দিনটি দেখতে চাই যেদিন খুনিরা কাঁদবে আর মজলুমরা হাসবে।”
এই ফোনালাপটি মিনা ফারাহ ও জামায়াত আমিরের মধ্যে আন্তরিক আলোচনার একটি প্রতিচ্ছবি। এটি মানবাধিকার, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এবং মজলুমদের পাশে দাঁড়ানোর গুরুত্বকে সামনে নিয়ে আসে।