জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের ১৩নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবুর বিরুদ্ধে উঠে এসেছে একাধিক ভয়ংকর অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারী প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে রেখেছেন।
নাজমুল হক বাবু জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার তত্ত্বাবধানে মেষ্টা ইউনিয়নে গ্রাম্য শালিস-বৈঠক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের নামে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি টাকা।
২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোটকেন্দ্র দখল ও ব্যালটে সিল মারার অভিযোগ রয়েছে নাজমুল হক বাবুর বিরুদ্ধে। তৎকালীন সময়ে তার নেতৃত্বে হাজিপুর বাজারে বিএনপির নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তিনি প্রকাশ্যে জিয়াউর রহমানের ছবি পোড়ানোর পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
নাজমুল হক বাবু হাজিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও হাজিপুর বাজার উন্নয়ন ফান্ডের অর্থের অপচয় এবং আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নাজমুল হক বাবুর নেতৃত্বে গড়ে তোলা ক্যাডার বাহিনী এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর হামলা, মামলা এবং নির্যাতন চালিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না।
নাজমুল হক বাবু ছাত্র আন্দোলন দমনে নীলনকশা তৈরি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ছাত্র জনতা যেন রাজপথে নামতে না পারে। তার নির্দেশনায় একাধিকবার ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জামালপুর সদর উপজেলায় অনেক ইউপি চেয়ারম্যান কর্মস্থল থেকে গা ঢাকা দিলেও নাজমুল হক বাবু এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি তার ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
নাজমুল হক বাবুর বিরুদ্ধে আনীত এই অভিযোগগুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির টাকার উৎস খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তারা।