তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি সংঘাত নিরসনে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চরম ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়েছেন ট্রাম্প।
সোমবার (৩১ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে গেলেও পুতিনের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাননি। এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করছি। কিন্তু যদি রাশিয়া সমঝোতায় না আসে, এবং যদি আমি মনে করি দায় তাদের— তাহলে রাশিয়ার তেলের ওপর ৫০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করব।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, পুতিন ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। এ কারণেই তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর অত্যন্ত রেগে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমি খুব রেগে গিয়েছিলাম, যখন পুতিন জেলেনস্কির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলেন। কারণ এটি সঠিক পথে যাচ্ছে না। নতুন নেতৃত্ব মানেই দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সম্ভব নয়।’
এর আগে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি তুলনামূলক নমনীয় ছিলেন। তবে এবারই প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিলেন তিনি।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির ফলে কূটনৈতিক বল এখন মস্কোর কোর্টে চলে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। হোয়াইট হাউস এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য না করলেও ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্প হয়তো গোপনে পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্প একদিকে জেলেনস্কির নেতৃত্বকে কটাক্ষ করেছেন এবং ইউক্রেনকে কিছু বিষয়ে ছাড় দিতে বলেছেন, অন্যদিকে পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের কৌশল বদলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘ক্রেমলিন আমার ক্ষোভের কথা জানে। তবে পুতিনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক সবসময়ই ভালো ছিল। যদি তিনি (পুতিন) সঠিক সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমার রাগ দ্রুত চলে যাবে।’ এই মন্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়, তাহলে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে।