নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিজ ছেলেকে হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশ ফাঁড়িতে আত্মসমর্পণ করেছেন এক পিতা। ৬ বছরের শিশু জুলফিকার জিহাদকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনা উপজেলার আমলাবো এলাকায় ঘটে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত পিতা জুবায়ের হাসান নরসিংদী সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে। জুবায়েরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে জুবায়ের হাসানের সঙ্গে পারভীন আক্তারের বিয়ে হয়। তবে বিবাহিত জীবনে শুরু থেকেই কলহ লেগে ছিল। গত অক্টোবরে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে পারভীন আক্তার তার ছেলেকে রেখে বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর থেকে জুবায়ের হাসান একাই ছেলেকে লালন-পালন করছিলেন।
গত ৯ ডিসেম্বর সকালে জুবায়ের হাসান চাকরির খোঁজে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় আসেন। কাজ খুঁজে না পেয়ে হতাশায় দিন কাটে তার। এ সময় জুলফিকার জিহাদ মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কান্না শুরু করলে জুবায়ের রাগান্বিত হয়ে ছেলেকে আমলাবো মুন্সী ফিলিং স্টেশনের পাশের একটি জলাশয়ে নিয়ে যান। সেখানেই কচুরিপানার মধ্যে ডুবিয়ে ছেলেকে হত্যা করেন।
হত্যার পর জুলফিকার জিহাদের মরদেহ কচুরিপানায় ঢেকে রেখে আত্মগোপনে যান জুবায়ের।
১০ ডিসেম্বর সকালে জুবায়ের হাসান পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে ছেলের বিকৃত মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর পর অনুশোচনায় রাতে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশের কাছে গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। জুবায়ের হাসানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ড পারিবারিক কলহ এবং মানসিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ প্রভাব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। অভিভাবকত্বের দায়িত্বশীলতা এবং পারিবারিক সহিংসতার কারণে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যে জরুরি, তা এ ঘটনা স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।